Top News

লাল কিলা বিস্ফোরণের পর দেশের বিভিন্ন শহরে উচ্চ সতর্কতা: নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, এনআইএ হাতে তদন্ত

 দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কিলা সংলগ্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের পর পুরো দেশজুড়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় সংঘটিত এই বিস্ফোরণে অন্তত ১৩ জন নিহত ও ৩০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশেপাশের দোকান, গাড়ি ও ভবনের জানালাগুলো ভেঙে যায়, আর মুহূর্তেই গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তদন্তে এখন পর্যন্ত কোনো সংগঠন দায় স্বীকার না করলেও, প্রশাসনের প্রাথমিক ধারণা এটি একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনাটির তদন্তভার জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)-র হাতে দেওয়া হয়েছে, এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করছেন।

বিস্ফোরণের পর রাজধানী দিল্লিতে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। ইন্ডিয়া গেট, সংসদ ভবন, চাঁদনী চক, লাল কিলা মেট্রো স্টেশন, ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ ও কমান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে। সমস্ত প্রবেশপথে গাড়ি ও যাত্রীদের তল্লাশি চালানো হচ্ছে। দিল্লির পাশাপাশি সীমান্তবর্তী নোয়িডা ও ঘাটিয়াবাদেও উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সম্ভাব্য পালিয়ে যাওয়া সন্দেহভাজনদের ধরতে যৌথ অভিযান চলছে এবং প্রতিটি থানা সতর্ক অবস্থায় আছে।

উত্তর ভারতের বাইরে মহারাষ্ট্রের মুম্বাই, নাগপুর ও পুনেতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজ্যের পুলিশ “অ্যান্টি-স্যাবোটাজ প্রোটোকল” কার্যকর করেছে, যাতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বোমা শনাক্তকারী দল (BDS) ও কুকুর স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে। একইভাবে দক্ষিণ ভারতের হায়দরাবাদে রেলওয়ে স্টেশন, মল, ধর্মীয় স্থান ও বাজারে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে, এবং ২৪ ঘণ্টা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু রাখা হয়েছে। চণ্ডীগড়েও টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, কারণ প্রশাসন আশঙ্কা করছে উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতেও নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন, “ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাঙতে কেউ পারবে না; অপরাধীরা কঠোর শাস্তি পাবে।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বলেছেন, দেশের প্রতিটি রাজ্যে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। প্রশাসন নাগরিকদের শান্ত থাকতে, গুজবে কান না দিতে এবং কোনো সন্দেহজনক বস্তু বা ব্যক্তি দেখলে অবিলম্বে পুলিশকে জানাতে অনুরোধ জানিয়েছে।

এই বিস্ফোরণ শুধু দিল্লিকে নয়, গোটা দেশকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। নাগরিকদের মনে আবারও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তবে সরকার আশ্বস্ত করেছে যে দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কোনো ত্রুটি রাখা হবে না। লাল কিলা বিস্ফোরণ এখন ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ এবং একই সঙ্গে একটি সতর্কবার্তা—যে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ঐক্যই এখন সময়ের দাবি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন