৯ এপ্রিল, ২০২৫: যুক্তরাজ্য সম্প্রতি শিক্ষাক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্কুলে শুরু হয়েছে নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজ ‘Adolescence’ এর প্রদর্শন, যার মূল উদ্দেশ্য কিশোর-কিশোরীদের সামাজিক মাধ্যমে আসক্তি, অনলাইন সতর্কতা, বিষাক্ত পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সংকট সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, এই সিরিজটি শিক্ষার্থীদের বুঝতে সাহায্য করবে কীভাবে ইন্টারনেটে ভুল ধারণা ছড়ায় এবং নারীদের প্রতি বিদ্বেষ জন্মায়। পাশাপাশি, এটি শিক্ষার্থীদের একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তোলার গুরুত্বও শেখাবে। সিরিজটি দেখানোর পর স্কুলগুলোতে আলোচনা ও কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতামত ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছে।
অ্যাডোলেসেন্স’ ইতোমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলোড়ন তুলেছে। এটি কেবল নেটফ্লিক্সের শীর্ষ তালিকায় স্থান পায়নি, একই সঙ্গে বাস্তবজগতেও প্রভাব ফেলেছে। পর্তুগালের পুলিশ বিভাগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন পর্যন্ত এই সিরিজ নিয়ে গাইড ও সহায়ক সামগ্রী তৈরি করছে—যার লক্ষ্য কিশোরদের ডিজিটাল বিপদ সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলা।
ভারতের প্রেক্ষাপটে বাস্তবতা
ভারতে যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একটা বিশাল অংশই কিশোর বয়সী, সেখানে এই ধরনের উদ্যোগ এখনও অনুপস্থিত। যদিও ‘অ্যাডোলেসেন্স’ সিরিজটি ভারতীয় দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে, কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে এমন কোনো সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।ভারতের শিক্ষা নীতি নির্ধারকদের জন্য এখনই সময় ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে মনোসামাজিক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার। কিশোরদের ডিজিটাল নিরাপত্তা, আত্মবিশ্বাস ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে স্কুলস্তরে এই ধরনের সিরিজ বা বিষয়ভিত্তিক আলোচনার প্রয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপ গোটা বিশ্বের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে—ভারত কি এই পরিবর্তনের পথে হাঁটবে? কিশোরদের রক্ষা করতে, শিক্ষায় প্রযুক্তির ভারসাম্য আনতে এবং সামাজিক মাধ্যমে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় এমন একটি উদ্যোগ দরকার। বাকি সবই সময়ের অপেক্ষা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন