Top News

বাকস্বাধীনতার উপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ?—হিন্দুদের অধিকারের পক্ষে কথা বলায় গ্রেপ্তার বিধান দাস

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

বরিশাল, ১০ এপ্রিল ২০২৫

বরিশালের হিজলাপাতার হাট এলাকার এক সাধারণ নাগরিক বিধান দাসকে তথ্য প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় ছিল গভীর রাত—৯ এপ্রিল, বুধবার, মধ্যরাতে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৭-৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা বিধান দাসের বাড়িতে হঠাৎ অভিযান চালিয়ে তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে এবং পরিবারের নারী সদস্যদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়।

গ্রেপ্তারের কারণ কী?

বিধান দাস ফেসবুকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চলমান নির্যাতনের নানা দিক তুলে ধরতেন। তিনি নির্যাতনের বাস্তব চিত্র, সংবাদ প্রতিবেদন ও ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করতেন, যার অনেকটাই দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের দুঃসহ বাস্তবতা নিয়ে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে—এমন মতপ্রকাশ কি আজকের বাংলাদেশে অপরাধ?

আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ, নাকি মতপ্রকাশের শাস্তি?

বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিটি নাগরিকের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোনও প্রকার আদালতের অনুমতি বা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া একজন নাগরিককে মধ্যরাতে গ্রেপ্তার করা সংবিধান ও মানবাধিকারের পরিপন্থী। তাহলে কী কারণে পুলিশের এই তড়িঘড়ি তৎপরতা?

“বিধান দাস কি অপরাধী?”

তিনি কি ডাকাত? না।তিনি কি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নষ্ট করেছেন? না।তিনি কি সহিংসতায় যুক্ত? না।তিনি কি শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের কেউ নন বলেই তার গ্রেপ্তার এত সহজ হলো?এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন মহলের মনে।

একটি ভয়াবহ বার্তা

বিধান দাসের গ্রেপ্তার একটি বার্তা দেয়—এই দেশে সংখ্যালঘু হিসেবে বাঁচতে গেলে চুপ করে থাকতে হবে। হিন্দুদের উপর নির্যাতনের কথা বলা যাবে না। সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো যাবে না।এই গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাকস্বাধীনতা ও নিরাপত্তা—উভয়ের ওপরই এক অন্ধকার ছায়া নেমে এসেছে।

আমরা কি এটাই চাই?

আমরা দাবি জানাই,অবিলম্বে বিধান দাসকে মুক্তি দেওয়া হোক।তথ্য প্রযুক্তি আইন যেন মতপ্রকাশের রোধে ব্যবহৃত না হয়।সংখ্যালঘুদের কণ্ঠরোধ নয়, তাদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা হোক।রাষ্ট্রকে মনে রাখতে হবে—একটি সভ্য ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে ওঠে ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার উপর। ভয় ও নিপীড়নের উপর নয়।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন