Top News

অতীত ও ঐতিহ্যে মোড়া কোচবিহার রাজবাড়ি

 

কোচবিহার রাজবাড়ি

কোচবিহারের নাম শুনলে প্রথমেই মাথায় আসে রাজা-বাদশাদের কথা। চোখের সামনে ভেসে ওঠে “রাজবাড়ি”(অপর নাম ভিক্টর জুবিলি প্যালেস)। রাজ আমলের নির্মিত রাজবাড়ি (The Coochbehar Palace), যা কোচবিহারবাসীর কাছে পরম শ্রদ্ধার এবং গর্বের বিষয়।জয়পুরের মহারানী গায়েত্রী দেবী এই কোচ রাজবংশের কন্যা।

   ১৮৮৭ সালে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ-এর রাজত্বকালে লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসের আদলে এই রাজবাড়িটি নির্মিত।গোটা স্থাপত্য জুড়ে ইউরোপীয় রেনেসাঁ শৈলীর প্রভাব।এই দোতলা ভবনটি প্রায় ৫১৩০৯ বর্গফুট জায়গা জুড়ে অবস্থিত। রাজবাড়ির সামনে রয়েছে এক প্রশস্ত চওড়া রাজপথ; যার দুই ধারে নানা রকমের গাছের সম্ভার দেখতে পাওয়া যায়। ভিতরে একটি ছোট্ট সুন্দর সুসজ্জিত উদ্যান রয়েছে এবং একটি পুকুর রয়েছে। যেখানে মাছ ছাড়াও কচ্ছপ দেখা যায়।এছাড়া বাড়িতে রয়েছে ড্রেসিং রুম, শয়নকক্ষ, বৈঠকখানা, ডাইনিং হল, বিলিয়ার্ড হল, গ্রন্থাগার, তোষাখানা, লেডিজ গ্যালারি ও ভেস্টিবিউল। রাজবাড়িতে ছোট-বড় মিলিয়ে পঞ্চাশটি কক্ষ রয়েছে।রাজ মহলের অন্দরমহল সজ্জার জন্য বিভিন্ন আসবাব পত্র এসেছিল বিদেশ থেকে। দর্শনার্থীদের জন্য খোলা রয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি ঘর।যদিও এই সব ঘরে রাখা আসবাব ও অন্যান্য সামগ্রী এখন অনেকগুলিই হারিয়ে গিয়েছে।রাজবাড়ির ভিতরে রয়েছে রাজ আমলের রাজাদের বিভিন্ন জিনিস সংরক্ষণ করে তৈরি করা একটি মিউজিয়াম।এই মিউজিয়ামে নানা ধরনের খাবারের জন্য ব্যবহৃত সোনার ও রুপোর বাটি, চামচ ও থালা রয়েছে। বেশ কিছু বন্দুক ও নানা ধরনের অস্ত্রও রয়েছে এই কোচবিহারের রাজ বাড়ির মিউজিয়ামে।রাজা-বাদশাদের ব্যবহৃত পোশাক ও দেখা যায়। রাজবাড়ির সামনে সুসজ্জিত উদ্যান রয়েছে এবং একটি পুকুর রয়েছে।

    রাজবাড়ির সিংহদুয়ারে দেখা যায় কোচ বংশের রাজাদের রাজ প্রতীকের চিহ্ন।শীলমোহর, সোনা ও রুপো দিয়ে সজ্জিত রয়েছে একটি কক্ষ।আগ্নেয় অস্ত্র কক্ষে দেখা যায় আমেরিকা এবং লন্ডন থেকে তৈরি করে নিয়ে আসা বিভিন্ন কোম্পানির বন্দুক, যা কেবল কোচবিহারের রাজারা নন ব্রিটিশরাও শিকারের কাজে ব্যবহার করতেন।আরেকটি কক্ষে রয়েছে কোচবিহারের ভাষালিপি, পোশাক-পরিচ্ছদ, গয়না, রাজবংশের নিয়মিত ব্যবহারিক দ্রব্যসামগ্রীর নিদর্শন।

  ১৮৯৭ সালে আসামের ভূমিকম্পে এই রাজবাড়ির ত্রিতল বিশিষ্ট অংশ ভেঙে পড়ে ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন