২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক আবহ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এই প্রেক্ষাপটে বিজেপি রাজ্যে শুরু করেছে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামক একটি নির্বাচনী প্রচারাভিযান। একদিকে এই কর্মসূচির মাধ্যমে নারী ভোটারদের আকর্ষণ করার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে তা ঘিরে জাতীয় নিরাপত্তা ও ধর্মীয় তুষ্টিকরণ বিতর্ক তীব্র আকার নিচ্ছে।
বিজেপির এই প্রচার মূলত নারী ভোটারদের মন জয় করতেই পরিকল্পিত। দলটির দাবি, রাজ্যে তৃণমূল সরকারের শাসনে নারী নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে তুষ্টিকরণ ও হিংসার রাজনীতি চলছে। আমাদের লক্ষ্য মা-বোনদের নিরাপত্তা এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা।”
তবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুধু নির্বাচনী কৌশল নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় সেনার পাল্টা অভিযান। এই সামরিক অভিযানের নামও ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। শাহ অভিযোগ করেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নেওয়া এই অপারেশনের বিরোধিতা করেছেন শুধুমাত্র মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে। এটা দেশের মা-বোনদের অপমান।”
তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগকে “রাজনৈতিক কুৎসা” বলে উড়িয়ে দিয়েছে। দলের নেত্রী কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “শাহ সাহেবের অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিজেপি এখন ধর্মীয় মেরুকরণ করে ভোটের রাজনীতি করতে চাইছে।” পাশাপাশি তৃণমূল পহেলগাম হামলায় নিরাপত্তা ব্যর্থতার দায় নিয়ে অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছে।
এই বিতর্কের ফলে ‘অপারেশন সিঁদুর’ এখন শুধু নারী ভোটার আকর্ষণের কৌশল নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা, ধর্মীয় বিভাজন এবং রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতার বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই দ্বিমুখী কৌশল রাজ্যের ভোটারদের মধ্যে স্পষ্ট মেরুকরণ ঘটাতে পারে।
ভোটের একবছর আগে থেকেই এই ধরণের রাজনৈতিক কৌশল রাজ্যে নির্বাচনের মেরুকরণ কতটা গভীর হবে, তা আগামী দিনে বোঝা যাবে। তবে এখনই বলা যায়, 'অপারেশন সিঁদুর' রাজ্যের নির্বাচনী লড়াইয়ের কেন্দ্রে চলে এসেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন