ধনখরের পদত্যাগের পর দেশের পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, নতুন উপরাষ্ট্রপতি হবেন দলেরই কোনও বর্ষীয়ান নেতা, যিনি বিজেপির আদর্শের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। ফলে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও জেডিইউ সভাপতি নীতীশ কুমারকে উপরাষ্ট্রপতির আসনে বসানোর সম্ভাবনা কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও জেডিইউ নেতা রামনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। অনেকে ভেবেছিলেন, বিহার ভোটের আগে জোটের সমীকরণ মজবুত করতে বিজেপি হয়তো নীতীশকে উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভাবতে পারে। তবে বিজেপি শিবির জানিয়ে দিয়েছে, এই বৈঠক ছিল একেবারেই রুটিন এবং এই পদ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।
এদিকে নতুন করে শোনা যাচ্ছে, কংগ্রেসের শশী থারুরের নামও উঠছে উপরাষ্ট্রপতির দৌড়ে। সম্প্রতি ‘অপারেশন সিঁদুর’ ইস্যুতে শাসক দলের প্রশংসা করে কংগ্রেসের অন্দরে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। তাই রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এই পরিস্থিতিতে থারুরকে মনোনয়নের জল্পনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। কমিশনের বিবৃতি অনুযায়ী, খুব শিগগিরই ভোটের নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা করা হবে। প্রাথমিক কাজের মধ্যে রয়েছে লোকসভা-রাজ্যসভার নির্বাচিত ও মনোনীত সদস্যদের নিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি, রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ এবং আগের নির্বাচনগুলির তথ্যসামগ্রী তৈরি।
এখনও পর্যন্ত বিরোধী শিবির থেকে কোনও প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ১৬ বার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন হলেও মাত্র চারবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই নির্বাচন হয়েছে। ফলে বিরোধীরা শেষ মুহূর্তে প্রার্থী দিতে পারে বলেই অনুমান।
প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখরের আচমকা পদত্যাগ ঘিরে নানা জল্পনা চলছে। তিনি স্বাস্থ্যজনিত কারণে ইস্তফা দিয়েছেন বললেও, সরকারপক্ষের একাংশের দাবি, ধনখর একাধিকবার ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেছিলেন। বিরোধীদের সমর্থন নিয়ে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার অভিশংসন প্রস্তাব গ্রহণ, কৃষক ইস্যুতে প্রকাশ্যে কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের কাছে প্রশ্ন তোলা, সব মিলিয়ে শাসক শিবিরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে, তাঁর পদত্যাগ না করলে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথাও ভাবা হচ্ছিল।
নতুন উপররাষ্ট্রপতি হিসেবে বিজেপির অন্দর থেকেই প্রবীণ, পরীক্ষিত কোনও নেতাকেই সামনের সারিতে আনার বার্তা কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছে শাসক দল। এখন অপেক্ষা নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ঘোষণার।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন