Top News

এক ঝড়ে তছনছ গোটা গ্রাম, ঘরহীন বহু পরিবার


North 24 porgana: আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা বাজতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির অঞ্চলের কুমড়োপাড়া গ্রামে নেমে এল এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক তাণ্ডব। হালকা বৃষ্টির মধ্যেই আচমকা ঝোড় হাওয়া বইতে শুরু করে এবং চোখের পলকে শুরু হয় প্রবল ধ্বংসাত্মক ঝড়। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই তছনছ হয়ে গেল গোটা গ্রাম। এই অবস্থায় উড়ে গেল বাড়ির অ্যাসবেস্টাসের চাল, ভেঙে পড়ল বড় বড় গাছ, এবং বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গোটা এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল।

গ্রামের বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা ছিল ভয়ঙ্কর। সেই গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, “এক মুহূর্তেই সব শেষ। বুঝতেই পারিনি এমন কিছু হতে চলেছে।” তাঁর ঘরের অ্যাসবেস্টাসের চাল উড়ে গেছে, মাটির বাড়ির অর্ধেকটা ধসে পড়েছে। মাথার উপর  আর কোনো ছাদ নেই। প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, গ্রামে অন্তত ২০টি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারপাশে শুধুই ধ্বংসলীলা। 


রাস্তার উপর গাছ, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ।  ঝড় থামলেও রয়ে গেছে তার ধ্বংসের চিহ্ন। গ্রামের রাস্তা জুড়ে হেলে পড়ে আছে বিশাল বিশাল গাছ। কোথাও বিদ্যুতের তার গাছের ডালে জড়িয়ে রয়েছে আবার কোথাও ছিঁড়ে নীচে পরে আছে। এর ফলে গোটা এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ। যোগাযোগ ব্যবস্থাও কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।


এত বড়ো দুর্ঘটনার  পরও প্রশাসনের কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি। কোনও বিপর্যয় মোকাবিলা দল, বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী-কেউই ঘটনাস্থলে হাজির হননি এখনও পর্যন্ত। তাই বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীরা নিজেরাই হাতে তুলে নিয়েছেন কুড়ুল, দড়ি, এবং করাত। নিজেদের উদ্যোগে রাস্তা পরিষ্কার করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সরকারি সাহায্যের অভাব গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।


গ্রামের লোকজন এরকম ঝড় এর আগে কখনও দেখেননি। আবহাওয়া দফতর থেকেও কোনও পূর্বাভাস মেলেনি। অনেকে বলছেন, এটা যেন ঘূর্ণিঝড়ের এক ছোট সংস্করণ, যা আকস্মিকভাবে বসতির উপর আঘাত হেনেছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে অব্যবস্থার ছায়া মিলেমিশে কুমড়োপাড়া গ্রামে। গ্রামের মানুষ দ্রুত সরকারি সাহায্য এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন