তরুণী কেন ছাত্রী নিবাসের ঘরে গেলেন?
যে পানীয় খাওয়ানো হয়েছিল, তাতে কী ধরনের মাদক ছিল?
পুলিশের দাবি অনুযায়ী, অভিযুক্ত ছাত্র কর্নাটকের বাসিন্দা এবং স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। তিনি তরুণীকে ক্যাম্পাসে কাউন্সেলিং-এর নাম করে ডেকে আনেন। ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় তরুণী নিজের নাম লিখে প্রবেশ করেন, তবে হোস্টেলে ঢোকার সময় কোনও ভিজিটর খাতায় সই করানো হয়নি। এটি নিয়মবিরুদ্ধ এবং ইচ্ছাকৃত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তারপর অভিযুক্ত ছাত্র তরুণীকে পিজ়্জা ও ঠান্ডা পানীয় খাওয়ান। অভিযোগ, সেই পানীয়তেই মিশিয়ে দেওয়া হয় ঘুমের ওষুধ অথবা মাদক জাতীয় কিছু। কিছুক্ষণের মধ্যেই তরুণী বেহুঁশ হয়ে পড়েন, এবং সেই অবস্থাতেই তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়।
তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল থেকে খাবার ও পানীয়ের নমুনা বাজেয়াপ্ত করেছে। সেগুলি ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যাবে, পানীয়ে ড্রাগ, ঘুমের ওষুধ বা অন্য কোনও রসায়ন মেশানো হয়েছিল কিনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্ত ছাড়াও তিনজন বন্ধু এই ঘটনার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাঁদের গতকালের গতিবিধি যাচাই করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পাশাপাশি, অভিযুক্ত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে পুলিশ, যাতে তার ব্যাকগ্রাউন্ড ও মানসিক অবস্থার সম্পর্কে বিশদে জানা যায়।
ঘটনার পর তরুণী প্রথমে ঠাকুরপুকুর থানায় যান, পরে তাঁকে পাঠানো হয় হরিদেবপুর থানায়। সেখানে তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ অনুযায়ী,
তিনি মাদক মেশানো পানীয় খেয়ে সংজ্ঞা হারান
সজ্ঞানে ফিরে ধর্ষণের বিষয়টি টের পান
কোনও নিরাপত্তা রেকর্ড বা সই ছাড়াই তাঁকে হোস্টেলে ঢোকানো হয়
এই সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এখন প্রশ্ন উঠছে,
একজন বহিরাগত তরুণী কীভাবে বয়েজ হোস্টেলের ঘরে ঢুকলেন?
কেন তাঁকে রেজিস্টারে সই করানো হয়নি?
কীভাবে ক্যাম্পাসে এমন ঘটনা ঘটে গেল, যেখানে রয়েছে কড়া নিরাপত্তা?
এই ঘটনায় IIM জোকা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। হস্টেল সুপার, সিকিউরিটি ইনচার্জ ও উপস্থিত অন্যান্য ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ।
ফরেনসিক রিপোর্ট পেলে আইনি পদক্ষেপ জোরদার হবে
তরুণীর মেডিক্যাল পরীক্ষা ও বয়ান সংগ্রহ শেষ হলেই ধর্ষণের মামলা দৃঢ় হবে
অভিযুক্ত ছাত্রের ডিভাইস ও চ্যাট হিস্ট্রি খতিয়ে দেখা হচ্ছে
IIM জোকা ধর্ষণকাণ্ড শুধু একটি ছাত্র ও একটি তরুণীর ঘটনা নয়, বরং প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ও নীতিগত দুর্বলতাকেও সামনে এনেছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখতে প্রয়োজন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং নৈতিক সচেতনতা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন