Top News

ভিডিও ধারণ করায় খুন সাংবাদিক

গাজীপুরে প্রকাশ্যে এক ব্যক্তিকে কোপানোর ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার রবিউল ইসলাম।

নিহত মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩২) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। গাজীপুরের চান্দনা এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির কাজও করতেন।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ের ঈদগাহ মার্কেটের সামনে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে।

নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম বলেন, বুধবার রাতে তুহিন বাসায় ফেরার পথে ৬-৭ জন যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাকে ধাওয়া করে। প্রাণ বাঁচাতে তিনি স্থানীয় এক চা দোকানে আশ্রয় নিলেও সন্ত্রাসীরা বুকে, গলায়, কাঁধে ও পিঠে এলোপাতাড়ি কোপায়, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় আশপাশে বহু মানুষ থাকলেও ভয়ে কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।

নিহতের সহকর্মী ও বন্ধু মো. শামীম হোসেন জানান, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে তারা একসঙ্গে হাঁটছিলেন। এ সময় এক নারী ও এক ব্যক্তির মধ্যে বিবাদ হয়, যা মারামারিতে রূপ নেয়। তুহিন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করলে দুর্বৃত্তরা তা দেখে ভিডিও মুছতে বলে। অস্বীকার করায় তারা তুহিনকে ধাওয়া দিয়ে ধরে প্রকাশ্যে হত্যা করে।

জিএমপির উপ-কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় বাদশা মিয়া নামে এক ব্যক্তি এক নারীর সঙ্গে বিবাদে জড়ালে সন্ত্রাসীরা নারীর পক্ষে গিয়ে তাকে আঘাত করে। বাদশা মিয়া পালিয়ে যান এবং ঘটনাটি তুহিন ভিডিও করেন। পরে ভিডিও মুছে না ফেলায় সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করে। পুলিশ জানায়, সংশ্লিষ্ট নারী একটি সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের সঙ্গে যুক্ত, যারা কৌশলে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে লুটপাট চালায়।

পুলিশের দাবি, এটি চাঁদাবাজি সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ড নয়। তুহিনের ফেসবুক প্রোফাইলেও চাঁদাবাজি বিষয়ক কোনো লাইভ বা পোস্ট পাওয়া যায়নি। তিনি স্থানীয় সমস্যা ও দুর্ভোগ নিয়ে নিয়মিত পোস্ট করতেন। হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার একটি ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করেছিলেন।

থানার ওসি শাহীন খান জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে, জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন