২২ অগস্ট ২০২৫, শুক্রবার (৫ ভাদ্র): ভাদ্র মাসের অমাবস্যা তিথিতে পালিত হচ্ছে কৌশিকী অমাবস্যা। তন্ত্রসাধনায় এই তিথির মাহাত্ম্য অপরিসীম। বিশ্বাস করা হয়, এই বিশেষ দিনে সাধনা করলে সাধক দেবীর অশেষ কৃপা লাভ করতে পারেন। তারাপীঠে মহাসাধক বামাক্ষ্যাপা এই কৌশিকী অমাবস্যাতেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তাই এদিন তারাপীঠে সারারাত ধরে বিশেষ পূজা ও সাধনার আয়োজন করা হয়। শুধু হিন্দুধর্মেই নয়, বৌদ্ধধর্মেও এই তিথির গুরুত্ব রয়েছে।
এবার অমাবস্যা শুরু হচ্ছে সকাল ১১টা ৫৮ মিনিটে (২২ অগস্ট) এবং শেষ হবে আগামীকাল সকাল ১১টা ৩৭ মিনিটে (২৩ অগস্ট)।
কে দেবী কৌশিকী?
পুরাণ মতে, দেবী কৌশিকী আসলে আদ্যাশক্তি মহামায়ারই আরেক রূপ। শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামে দুই অসুর ব্রহ্মার বর পেয়েছিল যে, কেবলমাত্র কোনও অযোনিসম্ভূত নারী তাঁদের বধ করতে পারবে। নিজেদের প্রায় অমর ভেবে তারা স্বর্গ-মর্ত্য জুড়ে অরাজকতা সৃষ্টি করতে থাকে।
সেই সময় দেবতারা মহাদেবের কাছে পরিত্রাণের উপায় জানতে গেলে, মহাদেব পার্বতীকে সবার সামনে “কালিকা” বলে সম্বোধন করেন। দেবীর মনে হয় স্বামী তাঁর গায়ের রং নিয়ে বিদ্রূপ করছেন। অভিমানে তিনি মানস সরোবরের ধারে কঠোর তপস্যা শুরু করেন।
সরোবরের জলে স্নান করার সময় তাঁর শরীর থেকে ঝরে পড়ে সমস্ত কালো কোষ। সেই কোষ থেকেই উদ্ভব হয় এক ঘোর কৃষ্ণবর্ণ, অপরূপ দেবীর। যেহেতু তিনি দেবীর শরীরের কোষ থেকে জন্ম নেন, তাই তাঁর নাম হয় কৌশিকী। তিনিই ছিলেন সেই অযোনিসম্ভূত শক্তি, যিনি ভাদ্র মাসের অমাবস্যা তিথিতে শুম্ভ-নিশুম্ভকে বধ করেন। সেই থেকেই এই তিথি পরিচিত হয় কৌশিকী অমাবস্যা নামে।
কৌশিকী অমাবস্যার মাহাত্ম্য
-
এই রাতকে তন্ত্র মতে “তারা রাত্রি” বলা হয়।
-
বিশ্বাস, এই রাতে এক বিশেষ মুহূর্তে স্বর্গ ও নরকের দরজা খুলে যায়।
-
সাধকরা শুভ কিংবা অশুভ শক্তির অধিকারী হতে পারেন।
-
কঠোর তপস্যা ও সাধনার মাধ্যমে এদিন কুণ্ডলিনী শক্তি জাগ্রত হতে পারে।
তাই ভক্ত ও সাধকদের কাছে কৌশিকী অমাবস্যা এক মহাসাধনার সময়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন