NT Bangla:
প্রত্যেক বছরই দূর্গাপূজায় কলকাতা ভ্রমণ আপনাকে এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার সম্মুখীন করবেই। কারন দুর্গাপূজা মানেই বাঙালির আবেগ, আনন্দ আর উৎসবের এক রঙিন ক্যানভাস। দুর্গাপূজার সময় কলকাতা শহর যেন এক অন্য রূপ ধারণ করে। ঝলমলে আলোর রোশনাই, চোখ ধাঁধানো প্যান্ডেল, নব নব থিমের অভিনবত্ব আর লক্ষ লক্ষ মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস – সব মিলিয়ে এ এক এমন অভিজ্ঞতা যা শুধু উপলব্ধি করা যায়, বর্ণনা করা কঠিন।
যাঁরা কখনও দূর্গাপূজার সময় কলকাতায় আসেননি, তাঁদের জন্য এই উৎসব এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এখানে পূজো মানে কেবল ধর্মীয় আচার নয়—এটি এক বিশাল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিল্পকলার উৎসব। কল্পনাকেও হার মানানো থিম প্যান্ডেল, প্রতিমা, আলোর খেলা আর মানুষের উচ্ছ্বাসের ঢেউ—সব মিলিয়ে কলকাতার দুর্গাপূজা সত্যিই ‘বিশ্বের শ্রেষ্ঠ উৎসব’।
কলকাতা দূর্গাপূজার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। ২০২১ সালে ইউনেস্কো কলকাতার দূর্গাপূজাকে ‘মানবতার অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই স্বীকৃতি কেবল একটি ধর্মীয় উৎসবের নয়, বাংলার শিল্প, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান।
কলকাতার দূর্গাপূজা মানেই নতুন নতুন থিম আর চোখ ধাঁধানো প্যান্ডেল। প্রতিটি প্যান্ডেল যেন এক একটি শিল্পকর্ম, যা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান। বিখ্যাত কিছু প্যান্ডেল যেমন – শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব, সুরুচি সংঘ, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, চেতলা অগ্রণী, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সর্বজনীন, কুমোরটুলি পার্ক ইত্যাদি প্রতি বছরই নতুন কিছু উপহার দেয়।
অন্যদিকে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী বনেদি বাড়ির পূজাগুলো এখানকার সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ি (সম্ভবত কলকাতার প্রাচীনতম), শোভাবাজার রাজবাড়ি, মল্লিক বাড়ি, লাহা বাড়ি, হালদার বাড়ি – এই পুজো গুলোর শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য আর রীতি-নীতি আপনাকে মুগ্ধ করবে। এখানে দেবীর আরাধনার পাশাপাশি পুরনো দিনের জমিদারী মেজাজ উপভোগ করতে পারবেন।
পুজোর সময় বিভিন্ন প্যান্ডেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। লোকনৃত্য, গান, নাটক আর বিভিন্ন শিল্পকলার প্রদর্শনী দেখতে পাবেন।পুজোর সময় শহরের অলি-গলিতে বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্টল বসে। ফুচকা, রোল, বিরিয়ানি থেকে শুরু করে বাঙালি রান্নার বিভিন্ন পদ – সবকিছুই আপনার রসনাকে তৃপ্ত করবে।
পুজোতে কলকাতা ঘুরতে গেলে প্রথম থেকেই প্ল্যান করাটা জরুরী। দূর্গাপূজার সময় শহরের রাস্তা প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকে। তাই সবচেয়ে নির্গ্যযোগ্য হল মেট্রো শিয়ালদহ থেকে গড়িয়াহাট, দমদম থেকে কালীঘাট – প্রতিটি লাইনে বিখ্যাত প্যান্ডেলের সংযোগ আছে। এছারাও বাস , ট্রাম, ক্যাব এসবের বাবস্থা আছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন