প্রবল বায়ুদূষণে কারণে ধুঁকছে ভারত। দূষণের কারণে কমছে নাগরিকদের আয়ু। ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ এমন পরিবেশ বাস করছেন, যেখানে বায়ুদূষণের বার্ষিক গড় (Annual Average Particulate Pollution) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনের থেকে বেশি। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট (EPIC) দাবি করছেন, ভারতে সবচেয়ে দূষণমুক্ত এলাকায় যাঁরা বাস করেন, তাঁরা প্রায় সাড়ে ৯ মাস বেশি বাঁচতেন যদি বিশ্বের মানদণ্ড মেপে বায়ুর মান (Air Quality) ঠিক থাকত। দিল্লি ও তার লাগোয়া এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি।
এই রিপোর্টে দাবি করছে, ২০২৩ সালে ভারতের বায়ুতে পিএম ২.৫ (বায়ুদূষক)-এর ঘনত্ব ছিল যা ২০২২ সালের চেয়ে অনেক বেশি। বর্তমানে বায়ুদূষণের পরিস্থিতি এতটাই মারাত্মক যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মাপের সেটা প্রায় ৮ গুণ বেশি। যদি WHO গাইডলাইন মেনে বায়ুদূষণের মাত্রা কমিয়ে ফেলা যায়, তাহলে ভারতীয়দের গড় আয়ু এক লাফে বেড়ে যাবে প্রায় সাড়ে তিন বছর।
২০২১ সালের WHO গাইডলাইন অনুযায়ী, PM 2.5-এর বার্ষিক গড় মাত্রা প্রতি কিউবিক মিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। আরও একটি দূষক, PM 10-এর মাত্রা প্রতি কিউবিক মিটারে ১৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু ভারতের নিজস্ব গাইডলাইনে এই মাত্রা অনেক শিথিল। PM 2.5-এর বার্ষিক গড় সহনমাত্রা প্রতি কিউবিক মিটারে ৪০ মাইক্রোগ্রাম এবং PM 10-এর সহনমাত্রা প্রতি কিউবিক মিটারে ৬০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত রাখা হয়েছে।
তাতেও দূষণের মাপকাঠির ভয়াবহ ছবি বদলায়নি। EPIC রিপোর্ট বলছে, ভারতের জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশ এমন জায়গায় থাকেন যেখানে PM 2.5-এর বার্ষিক গড় মাত্রা ভারতের নিজস্ব বেঁধে দেওয়া স্তর থেকেও অনেক বেশি। ভারতের ক্ষেত্রে উত্তরদিকে সমভূমি এলাকা সবচেয়ে বেশি দূষিত। দেশের অন্তত ৩৮.৯ শতাংশ বাসিন্দা সেই এলাকায় থাকেন। যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন মেনে চলা যায়, তাহলে এই এলাকায় বাসিন্দাদের গড় আয়ুও ৫ বছর বেড়ে যাবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, দূষণের কবল থেকে দেশকে বের করে আনতে পারলে, সবচেয়ে বেশি লাভ হবে দিল্লির বাসিন্দাদের। দেশের রাজধানীতে বাসিন্দাদের গড় আয়ু বেড়ে যাবে ৮ বছর। দূষণের মাত্রা কমলে দিল্লি ও লাগোয়া এলাকা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের বাসিন্দারাও গড় আয়ু বৃদ্ধির লাভ পাবেন বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন