Top News

৪৭ বছরের অপেক্ষার অবসান, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বসেরা ভারতের মেয়েরা


কাটল ৪৭ বছরের খরা। ভারতের বোলারদের দাপটে কুপোকাত দক্ষিণ আফ্রিকা। অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে অবশেষে ৪৭ বছরের মধ্যে প্রথমবার ICC মহিলা বিশ্বকাপ জিতল ভারত। দেশের মাথায় জয়ের মুকুট পরিয়ে দিল ভারতের রানিরা। সব উইকেটে গুটিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০২৩ সালে রোহিত-বিরাটদের বিশ্বকাপ না জেতার সেই চোখের জল মোছালেন হরমনপ্রীত, স্মৃতিরা। 

রীতিমতো ইতিহাস সৃষ্টি গড়ল ভারত। টার্গেট দেওয়া ৫২ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল ভারত। এর আগে ২০০৫ এবং ২০১৭ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেও দেশে ট্রফি আনতে পারেনি ভারতীয় মহিলা দল। অবশেষে সব রেকর্ড ভেঙে জয়ের শিরোপা জিতল ভারত। ১৯৭৩ সালে শুরু হয়েছিল মেয়েদের বিশ্বকাপ। ১৯৭৮ সালে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছিল ভারত। কিন্তু তখন থেকে কোনবারও বিশ্বকাপ জেতেনি ভারত। কিন্তু ২০২৫ এর বিশ্বকাপের শুরু থেকেই যেন জয়ের লক্ষ্যেই এগোচ্ছিল ভারত। লক্ষ্যভেদ করেনি। অবশেষে ৪৭ বছরের দুর্নাম কাটল ভারতের। ৩ বার বিশ্বকাপ ফাইনাল অবধি পৌঁছেও জিততে পারেনি ভারত। কিন্তু সেই দুঃখ ২০২৫ সালে ভুলিয়ে দিল হরমনপ্রীতের নেতৃত্বে ভারতীয় দল।

রবিবার সকাল থেকেই মুম্বইয়ের মুখ ভার ছিল। ঠিক টস হওয়ার আগেই নামে ভারী বৃষ্টি। ফলে টসের অনেক বিলম্ব হয়। ৪.৩২ মিনিটে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিং করতে পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ ম্যাচ জিতলে দক্ষিণ আফ্রিকাও তাদের দেশে প্রথম বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে যেতে পারত। কিন্তু ভারতের রানিদের হাতে একেবারে দুরমুশ হল দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারত ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম থেকেই ভালই খেলছিল। কিন্তু ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৯৮ রান করে থামে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিককে টার্গেট দেয় ২৯৯। শেষের দিকে অনেক ধীর গতিতে খেলেছে ভারত।বিরতিতে সুনিধি চৌহানের কয়েক মিনিটের পারফরম্যান্সের পর টার্গেট পূরণ করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু তখনও মুম্বইয়ের গ্যালারি থমথমে। সুনিধির পারফরম্যান্সেও কোনও উত্তেজনা ছিল না দর্শকদের ।

কারণ তখন সবারই লক্ষ্য ছিল টিম ইন্ডিয়াকে জিততে দেখা। যাই হোক, দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথমদিকে ভাল ব্যাটিং করলেও প্রথমেই আমনজ্যোতের থ্রোয়ে রান আউন হন ব্রিটস। তবে উইকেট পেলেও চাপ বাড়ছিল ভারতের। মাত্র ১২৫ রানেই আউট হন প্রোটিয়াদের ৪ প্লেয়ার। তবে তাতেও চাপ কমেনি ভারতের। জিততে হলে তাদের আরও উইকেট ফেলার দরকার ছিল। তবে স্পিনারদের বল খেলতে সমস্যা হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। হরমনপ্রীতের বলে এবং শেফালি ভার্মার ক্যাচে আউট হন সুনে লুসে এবং হরমনপ্রীতের বলে রিচা ঘোষের ক্যাচে আউট হল অভিজ্ঞ মারিজান কাপ। তখনও ২৬ ওভারে ১৩৬ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। আস্তে আস্তে ভারতে যেটার পথ প্রশস্ত হচ্ছিল। গ্যালারিতে মহিলা সহকর্মীদের উৎসাহ দিচ্ছিলেন রোহিত শর্মা। যাই হোক, দক্ষিণ আফ্রিকার যখন ৩০ ওভারে ১৫৩ রান, তখনই দীপ্তি শর্মার বল এবং রাধা যাদবের ক্যাচে আউট হন ‘s জাফটা। ভুয়ো বল খেলছিলেন, কিছুতেই রান পাচ্ছিলেন না তিনি। মরিয়া হয়ে ছয় মারতে গিয়েই আউট হন তিনি। আজ ম্যাচের শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটে তেমন জোর ছিল না। সেই ফায়দা নেয় ভারত। ২৯৯ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৫৩ রানেই ৫ আউট হয়ে যায় প্রটিয়াদের। ১৯৫ রানে তখনও ভারতের হাত শক্ত হয়নি। শিশির পড়ছে। ফলে বল গ্রিপ করা শক্তি। এ বারই ভারতীয় স্পিনারদের আসল পরীক্ষা। যারা মানসিক ভাবে ভাল জায়গায় থাকবে তারাই জিতবে। শিশির পড়ছে। ফলে বল গ্রিপ করা শক্তি। ভারতীয় স্পিনারদের আসল পরীক্ষা। তবে এই সময় হাতের ক্যাচ ফেলে দিয়ে ডার্কসেনকে ফেরানোর সুযোগ মিস করেছিলেন দীপ্তি শর্মা। তখনও ৩৭ ওভারে ১৯৭ রান তোলে প্রটিয়ারা। যেটার জন্যে তখনও ১০০ রান বাকি তাদের। তবে ২১০ রানের দোরগোড়ায় গিয়ে ভাঙে জুটি। দীপ্তির ফ্লাইটেড বলে সামনের পায়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড আউট হয়ে যান ডার্কসেন। সঙ্গে ৬ নম্বর উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে সেমি ফাইনালের মতো ফাইনালেও ১০০ রান পার করেছেন লরা উলভার্ট। মহিলা ক্রিকেট ইতিহাসেও তিনি নাম লিখিয়েছেন। কিন্তু ১০১ রানের মাথায় দীপ্তি শর্মা বলে এবং আমনজ্যোৎ-এর ক্যাচে সাজঘরে ফেরৎ যান লরা উলভার্ট। দীপ্তি আউট করেন C. ট্রিয়নকেও। তবে শেষ মুহূর্তে চার ছয় মেয়েও কোনও লাভ হল না। ২৪৬ রানের মাথায় সব উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫২ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুরমুশ করে দেশকে জেতাল ভারতের রানিরা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন