Top News

নভেম্বরের শুরুতেই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল অন্ধ্রপ্রদেশের ভেঙ্কটেশ্বর মন্দির, একাদশীর দিন পুজোর ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল অন্তত ১০ জনের

১ নভেম্বর, শনিবার সকালে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার কাসিবুগ্গা এলাকায় অবস্থিত শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে ঘটে গেল এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। এইদিন একাদশী উপলক্ষে ভক্তদের ভিড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, যার ফলে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০ জনের। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে ১০ জনের মৃত্যু ছাড়াও আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।  

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র মারফত জানা যায়, একাদশীর দিন সকাল থেকেই অসংখ্য ভক্ত মন্দিরে আসতে শুরু করেন। মন্দিরের ধারণক্ষমতা তিন হাজারের বেশি না হওয়া সত্ত্বেও, সেখানে প্রায় পঁচিশ হাজার মানুষ একসঙ্গে প্রবেশের চেষ্টা করায় পরিস্থিতি দ্রুতই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মন্দিরের প্রবেশদ্বার ও প্রস্থানপথ এক হওয়ার ফলে, বাড়তে থাকা ভিড়ের চাপে হঠাৎই লোহার একটি গ্রিল ভেঙে পড়ে, ফলে ভক্তদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। বহু মানুষ ভিড়ে চাপা পড়ে যান, এবং কয়েকজন সেখানেই প্রাণ হারান। 

স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই ভিড়ের বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। পুলিশ বা সিভিল ডিফেন্সকে আগে থেকে যথাযথভাবে অবগত না করায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তদন্তে জানা গিয়েছে, মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো বিশেষ অনুমতিপত্র ছিল না। এবিষয়ে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, যদি আগাম অনুমতি নেওয়া হত, তাহলে অতিরিক্ত বাহিনী ও ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করা যেতে পারতো, যা হয়তো আটকে দিতে পারতো ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের এই দুঃখজনক ঘটনাকে।  

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যবিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে। একইসঙ্গে প্রশাসনিক অবহেলার বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।  

বিশেষজ্ঞদের মতে, এইদিন ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরে বিপুল জনসমাগমের সময়ে নিরাপত্তা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাটি শুধুমাত্র অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য নয়, সমগ্র দেশের জন্য এক বিশেষ সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ঘটনার পর মন্দির কর্তৃপক্ষের দায়িত্ববোধ, সরকারি নজরদারি ও জনগণের নিরাপত্তার মানদণ্ড নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসন কর্তৃক ভবিষ্যতে এই ধরনের ধর্মীয় সমাবেশে পর্যাপ্ত পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।  

খবর সূত্র জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতিতে উদ্ধারকাজ চলছে। আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি নিহতদের শনাক্তকরণের কাজও চলছে। এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন