১ নভেম্বর, শনিবার, কেরলের রাজধানী তিরুবনন্তপুরমে আয়োজিত কেরল প্রতিষ্ঠা দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন কেরলকে দেশের প্রথম ‘চরম দারিদ্র্যমুক্ত’ রাজ্য বলে ঘোষণা করেছেন। দীর্ঘ চার বছর ধরে পরিচালিত ‘এক্সট্রিম পভার্টি ইরাডিকেশন প্রজেক্ট’ সম্পূর্ণ হওয়ার পর এই ঐতিহাসিক জয়ের কথা ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, “কেরল আজ দারিদ্র্য বিমোচনের পথে দেশের কাছে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।”
রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে শুরু হয়েছিল এই প্রকল্প, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের সকল চরম দরিদ্র পরিবারকে চিহ্নিত করে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতি নিশ্চিত করা। বিভিন্ন স্থানীয় সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় প্রায় ৬৪,০০৬টি পরিবারকে চরম দারিদ্র্যপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এই পরিবারগুলির সামগ্রিক উন্নতির কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। এদের মধ্যে বহু পরিবারকে আবাসন ও জমি দেওয়া হয়েছে, এবং এই সকল মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করার জন্য ও এদের জীবিকানির্ভর হওয়ার জন্য সহায়তা করা হয়।
প্রকল্পের অধীনে ইতিমধ্যেই পাঁচ হাজারের বেশি নতুন এবং পুনঃনির্মিত ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে এবং জমিহীন কয়েকশ পরিবারকে সরকারি জমি দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, দরিদ্র পরিবারগুলির স্বাস্থ্যের উন্নতির কথা মাথায় রেখে বিশেষ কিছু কর্মসূচি চালু করা হয়েছে, পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “কেরলের এই সাফল্য প্রমাণ করে, নীতি ও মানবিকতার সমন্বয়ে চরম দারিদ্র্য নির্মূল করা সম্ভব।”
কেরলের এই সাফল্য দেশে সামাজিক উন্নয়ন নীতির ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। ধারণা করা হচ্ছে যে ‘দারিদ্র মুক্ত’ রাজ্য গড়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার ও অন্যান্য রাজ্যগুলি কেরলের এই মডেল অনুসরণে আগ্রহী হবে। রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও এই প্রকল্পের ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং যে পরিবারগুলি পুনরায় দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে পড়তে পারে, তাদের জন্য বিশেষ সহায়তার ব্যবস্থা থাকবে। দেশের উন্নয়নের পথে কেরলের এই সাফল্য নিঃসন্দেহে একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে।
.jpeg)
.jpeg)

.jpeg)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন