নভেম্বরের মাঝামাঝি সামান্য পারদ পতন হলেও, বাংলায় এখনই জাঁকিয়ে শীতের আগমন ঘটছে না। বরং আবহাওয়ার মেজাজ যেন এক রহস্যময় দোলাচলে! আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, তাপমাত্রা কমেছে ঠিকই, কিন্তু শীতের সেই কনকনে অনুভূতি পেতে রাজ্যবাসীকে এখনও কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আগামী তিন-চার দিনে দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি নামতে পারে। এদিকে তিলোত্তমা কলকাতার পারদ আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে, যা এই মরশুমে খানিকটা হলেও স্বস্তি দেবে। তবে পশ্চিমের জেলাগুলিতে শীতের আমেজটা যেন আগে থেকেই জাঁকিয়ে বসেছে, সেখানে তাপমাত্রা আরও ১-২ ডিগ্রি কমবে বলে জানা যাচ্ছে।
কিন্তু, প্রকৃতির এই শান্ত মেজাজের মধ্যেই লুকিয়ে আছে অন্য গল্প! ২৫ নভেম্বর দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে শ্রীলঙ্কা উপকূলের কাছে আরও একটি নিম্নচাপ তৈরির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এর আগে আন্দামান সাগর ও মালাক্কা প্রণালীর কাছে অবস্থান করা নিম্নচাপটি ইতিমধ্যেই শক্তি বাড়িয়েছে। এই ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হলে তা পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে যেতে পারে। সেই কারণেই আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে শুরু হয়েছে দুর্যোগের ঘনঘটা। সেখানে প্রবল বর্ষণ আর ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা জারি হওয়ায় পর্যটক এবং মৎস্যজীবীদের জন্য জারি হয়েছে লাল সতর্কতা! ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তার নাম হবে 'সেনিয়ার', অর্থাত্ 'সিংহ', নামটি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। এই 'সেনিয়ার' নভেম্বরের শেষে বিশাখাপত্তনমের কাছাকাছি ল্যান্ডফল হতে পারে।
তবে আশার কথা, এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপের সরাসরি কোনো প্রভাব আপাতত বাংলায় পড়ছে না। আগামী সাত দিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ায় বড় কোনও সতর্কতা নেই। দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়া মূলত শুষ্কই থাকবে। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিং ও কালিম্পঙে। সব মিলিয়ে, আগামী কয়েকটা দিন দক্ষিণবঙ্গবাসী হালকা শীতের আমেজ অনুভব করতে পারবেন। মঙ্গলবারের মধ্যে পারদ আরও কিছুটা নামার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, আগামী সপ্তাহ থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই কুয়াশার দাপট বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এই মরশুম পরিবর্তনের সময়টা কিন্তু ঘরের ঘরে সর্দি-কাশি-জ্বরের প্রকোপ বাড়াচ্ছে, তাই ছোট থেকে বড়, সকলেরই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। প্রকৃতি একদিকে যেমন উষ্ণতা থেকে মুক্তি দিচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে তৈরি করছে এক অদেখা দুর্যোগের পটভূমি!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন