কাঁথি সাংগঠনিক জেলা আয়োজিত ভগবানপুরের মুগবেড়িয়ায় 'পরিবর্তন সংকল্প সভা' মঞ্চ থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবার সরাসরি বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) এবং রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করলেন। তিনি বিএলওদের নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ কঠোরভাবে মেনে চলার এবং ভোটার তালিকা থেকে অবৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার আহ্বান জানান।
বিএলওদের প্রতি শুভেন্দুর বার্তা
বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ চলার মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, কিছু বিএলও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আনুগত্য দেখাচ্ছেন এবং একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করার চেষ্টা করছেন। তিনি বিএলওদের সতর্ক থাকতে বলেন যাতে এসআইআর-এর পর কোনও অবৈধ ভোটারের নাম খসড়া তালিকায় না থাকে।
বিরোধী দলনেতা আরও দাবি করেন, তৃণমূল বিএলওদের ভয় দেখাচ্ছে এবং 'কাজ করতে অনীহা' সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, "রাজ্যের কোনো প্রকৃত নাগরিক, বিএলও, এমনকী বিজেপি-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিএলএ- কেউই এসআইআর নিয়ে ভীত নন। ফলে তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর লোকেদের মিথ্যা প্রচারে বিশ্বাস করেন না।"
১ কোটি অনুপ্রবেশকারী বিতাড়নের হুঁশিয়ারি
শুভেন্দু অধিকারী আবারও জোর দিয়ে বলেন যে, এসআইআর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে প্রায় এক কোটি অনুপ্রবেশকারীর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি ছিল আরও তীব্র:
"অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা, আমাদের প্রত্যেককে শনাক্ত করে বিতাড়িত করার আগেই তাদের দ্রুত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া উচিত।"
তবে তিনি স্পষ্ট করেন, ভারতীয় নাগরিকদের এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র বাংলাদেশি মুসলমান এবং মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করা হবে, অন্যদিকে "যাঁরা বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে এসেছেন, তাঁদের সিএএ-এর অধীনে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।"
মমতার স্লোগান নিয়ে কটাক্ষ
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান 'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার' নিয়েও মন্তব্য করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, "আমরা বলি, প্রত্যেক ব্যক্তি তাঁদের বিশ্বাস অনুযায়ী উৎসব পালন করবেন। রাজ্য কোনো ধর্মের উৎসবের অংশ হবে না, তবে নিশ্চিত করবে যাতে সবাই তাঁদের বিশ্বাস অনুযায়ী তা পালন করতে পারেন।"
তৃণমূলের পাল্টা আক্রমণ
শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের ইনচার্জ ও মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য পাল্টা আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, শুভেন্দু অধিকারী 'এক কোটি ভোটার সিনড্রোমে' আক্রান্ত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "শুভেন্দু কেন জনসভায় বারবার এই সংখ্যাটি উল্লেখ করছেন? নাকি এসআইআর শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন থেকে কোনো গোপন তথ্য পেয়েছেন? বিজেপির স্বার্থ পূরণের জন্য কি কোনো পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য রয়েছে?"
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন