Top News

SIR এর লিস্টে নাম না থাকলেও চিন্তা নেই ! দেখে নিন কমিশনের বড়ো আপডেট

নাগরিকত্বের অধিকার নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। এবার এলো কমিশনের মাস্টারস্ট্রোক। ভোটাধিকার এবং নাগরিকত্বের অধিকারের সীমারেখা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে সাধারণ মানুষের মনে যে সংশয় আর আতঙ্ক জমা হয়েছিল, সেটা এবার যেন পুরোপুরি ছেঁটে ফেলল ভারতের নির্বাচন কমিশন। Election Commission of India বা ECI নামে পরিচিত এই সংস্থা থেকে একটা সাম্প্রতিক এবং খুব স্পষ্ট বিবৃতি এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, ভোটার তালিকায় নাম থাকা যেকোনো ব্যক্তির নামের পাশে D বা Doubtful চিহ্ন লাগা থাকলেও তাঁর ভারতীয় নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার সঙ্গে এর কোনো যোগ নেই।
ছবির উৎস : ইন্ডিয়া টুডে

 D বা ডাউটফুল ভোটার চিহ্ন দেওয়ার প্রক্রিয়াটা নির্বাচন কমিশনের ভিতরের একটা পদ্ধতি। মূলত ভোটার তালিকা তৈরি করার সময় বা তথ্য আপডেট করার সময় যদি কোনো ব্যক্তির নাম দু'জায়গায় পাওয়া যায়, যাকে বলে ডাবল এন্ট্রি। অথবা অসম্পূর্ণ তথ্য, ভুল ঠিকানা বা গরমিল দেখা যায়। তখন সেই নামের পাশে D চিহ্ন দেওয়া হয়। এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো ভোটের স্বচ্ছতা রক্ষা করা। আর নিশ্চিত করা যে কেউ একাধিকবার ভোট দিতে না পারে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই D চিহ্ন শুধু ভোটার তালিকা ঠিক করার জন্য ব্যবহার হয়। এটা কোনোভাবে ব্যক্তির জাতীয়তা বা নাগরিকত্বের আইনি অবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে না।

নির্বাচন কমিশন বলেছে যে, ভোটার তালিকায় নাম যোগ করার প্রক্রিয়া চলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫০ অনুযায়ী। আর ১৯৫১ এর আইনও এতে জড়িত। অন্যদিকে নাগরিকত্ব নির্ধারণের ব্যাপারটা আলাদা। সেটা জটিল আইনি কাঠামোর অধীনে। ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ এটা নিয়ন্ত্রণ করে। নির্বাচন কমিশন একটা সাংবিধানিক সংস্থা। তাদের কাজ শুধু নির্বাচন চালানো। কারও নাগরিকত্ব প্রমাণ করা বা বাতিল করার ক্ষমতা তাদের নেই। সেই ক্ষমতা শুধু নির্দিষ্ট ট্রাইবুনাল বা আদালতের হাতে। তাই ভোটার তালিকায় D স্ট্যাম্প লাগলেও, যতক্ষণ না আইনি প্রক্রিয়ায় কোনো ট্রাইবুনাল বা আদালত তাকে বিদেশি বলে ঘোষণা করে, ততক্ষণ তার নাগরিকত্ব সুরক্ষিত থাকবে।

স্বস্তির বার্তা এসেছে কমিশনের ঘোষণা দিয়ে। সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক ছিল, সেটা অনেকটা কমেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্ক না করলেও সতর্ক থাকতে হবে। নাগরিকদের সক্রিয় হয়ে উঠতে হবে। তথ্য যাচাই করা জরুরি। যারা D চিহ্নিত, তাঁরা তাড়াতাড়ি নির্বাচন কমিশনের স্থানীয় অফিসে যান। অথবা BLO এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ভোটার তালিকার ত্রুটি ঠিক করুন। দলিল সংরক্ষণ করুন। নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য জন্মের শংসাপত্র রাখুন। রেশন কার্ড, শিক্ষাগত শংসাপত্র বা জমির দলিল সব হাতের কাছে রাখুন। এটা বুদ্ধিমানের কাজ।

কমিশনের এই ঘোষণা একটা শক্ত বার্তা দিয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রশাসনিক ত্রুটি কখনো মৌলিক নাগরিকত্বের অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। গণতন্ত্রে ভোটাধিকার একটা পবিত্র দায়িত্ব। নাগরিকত্ব তার ভিত্তি। দুটোকে মিশিয়ে ফেলার কোনো স্থান নেই।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন