এসএসসি (School Service Commission) পরীক্ষাকে ঘিরে ফের নতুন করে উত্তাল রাজ্য। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ হতেই মঙ্গলবার করুণাময়ী চত্বরে জমে ওঠে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। এর মধ্যেই সন্ধ্যায় নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে ইন্টারভিউয়ের তারিখ ঘোষণা করল স্কুল সার্ভিস কমিশন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ২৬ নভেম্বর থেকেই আঞ্চলিক অফিসগুলিতে শুরু হবে ইন্টারভিউ পর্ব। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ধাপে ধাপে সকল যোগ্য প্রার্থীকে ডাকা হবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গোটা নিয়োগ–প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ায় প্রায় ২৬ হাজার প্রার্থীর নিয়োগ বাতিল হয়েছিল। সেই সময় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, চলতি বছরের মধ্যেই নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই গত কয়েক মাস ধরে চলেছে পরীক্ষা ও তালিকা তৈরির কাজ।
তবে ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশের পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বহু চাকরিপ্রার্থী। কাটঅফ মারাত্মকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ৬০-এর উপরে নম্বর পেলেও বহু প্রার্থী ডাক পাননি। কমিশনের প্রকাশিত তালিকায় মোট ২০ হাজারের কিছু বেশি প্রার্থীকেই ইন্টারভিউয়ের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই উত্তাল হয়ে ওঠে করুণাময়ী। পুরনো চাকরিপ্রার্থী এবং নতুন পরীক্ষার্থীরা একযোগে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
নিয়োগ–প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্কও আরও ঘনীভূত হয়েছে। নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির লিখিত পরীক্ষা আগে সম্পন্ন হলেও এখনও গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র পরীক্ষা বাকি। কিন্তু তার মধ্যেই একাদশ ও দ্বাদশ স্তরের ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে। সবচেয়ে বেশি বিরক্তি তৈরি করেছে কাটঅফ নিয়ে। এ বার কাটঅফ ৭০ শতাংশেরও বেশি, ফলে নতুন প্রার্থীরা বিপাকে পড়েছেন সবচেয়ে বেশি। অনেকের অভিযোগ, এমন উচ্চ কাটঅফ আগে দেখা যায়নি, এবং এটি নতুনদের তুলনায় অভিজ্ঞ পরীক্ষার্থীদের বেশি সুবিধা দিচ্ছে।
এর পাশাপাশি আরও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে—আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও নাকি আগের বিতর্কিত বা দাগী প্রার্থীরা পরীক্ষায় বসেছেন। এমনকি তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ইন্টারভিউ কলও পেয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে নিয়োগ–প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ, সে নিয়েও তৈরি হয়েছে নতুন প্রশ্ন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন