নভেম্বর মাসের শেষভাগে এসেও এই বাংলার উষ্ণতা একটা অদ্ভুত অস্বস্তি তৈরি করছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সবাই আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। কবে নামবে সেই কাঙ্ক্ষিত ঘন শীত। কিন্তু প্রকৃতির খেলা অন্যরকম চলছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে স্পষ্ট যে এবার শীতের আগমন আরও পিছিয়ে যাবে। এর মূল কারণ সমুদ্রের মধ্যে জন্ম নেওয়া একটা নতুন আতঙ্ক। আন্দামান সাগরে গড়ে উঠছে একটা নিম্নচাপ। এটা শক্তি বাড়াতে বাড়াতে একটা ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে।
সেই নিম্নচাপ সোমবার গভীর রূপ নেবে। এটা ধাপে ধাপে শক্তি জমিয়ে বুধবারেই পূর্ণ সাইক্লোন হয়ে উঠবে। এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে আরব আমিরশাহি । তার নাম সেনিয়ার। ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত ল্যান্ডফলের জায়গা এখনও স্পষ্ট নয়। এটা ওড়িশা বা অন্ধ্র বা বাংলাদেশ বা আমাদের বাংলার উপকূলে আসতে পারে। কিন্তু তার আগেই এর পরোক্ষ প্রভাব বাংলায় পড়তে শুরু করবে। হাওয়া অফিসের খবর অনুসারে এই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে দক্ষিণবঙ্গের অনেক জায়গায় অকাল বৃষ্টির ভয় দেখা দিয়েছে। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়ায় শীত দূরে সরে যাবে না। বরং দিন রাতে তাপমাত্রা বেড়ে আবহাওয়া আরও গুমোট হবে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন যে ২০২১-২০২২ সালে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শীত উধাও হয়ে গিয়েছিল। এবারও প্রকৃতি সেই পথেই যাচ্ছে। এই অবস্থা শুধু শহরের আরামপ্রিয় লোকদের হতাশ করছে না। খেটে খাওয়া কৃষকদেরও মাথায় হাত দিতে হচ্ছে। কারণ এই অসময়ের বৃষ্টিতে ধান আর আলুর চাষে চরম ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আন্দামানে ইতিমধ্যে চরম সতর্কতা জারি হয়েছে। পর্যটকদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের কিনারায় থাকা প্রত্যেক মানুষ তীব্র উদ্বেগে অপেক্ষা করছে। এই ঘূর্ণিঝড় উষ্ণতা বাড়াবে। অথবা আরও বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন