বৈশাখ মাসের শুক্লা পক্ষের তৃতীয়াতে এই পূজ হয় । এটি হিন্দুদের অন্যতম শুভ উৎসব যা অফুরন্ত সম্পদ প্রদান করে। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন কথিত আছে এই দিন সোনা কিনলে তার ক্ষয় হয় না, বরং দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়। হিন্দু ধর্মে এই পবিত্র দিনে অসংখ্য উৎসব এবং অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই বছর, অক্ষয় তৃতীয়া ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে পালিত হতে চলেছে।
বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৬ বৈশাখ ১৪৩২।
পূজ ও সোনা কেনার শুভ মুহুর্ত :
৩০ এ এপ্রিল সকাল 05:40am থেকে 12:18 pm ।
আর সোনা কেনার সময় 5:41am থেকে 2:12 পর্যন্ত।
অক্ষয় তৃতীয়া, যা "আখা তীজ" নামেও পরিচিত। সংস্কৃত অনুসারে 'অক্ষয়' শব্দের অর্থ হল 'যার কোনও ক্ষয়' নেই অর্থাৎ যা কখনও শেষ হয় না। তাই মনে করা হয় অক্ষয় তৃতীয়ায়
করা যে কোনও কাজ অক্ষয় থাকে। শাস্ত্র মতে মনে করা হয় এই দিন সব পাপ দূর হয়ে যায়
এবং সুখ প্রদান করে । অক্ষয় তৃতীয়ার দিন ব্যবসায়ীরা লক্ষী গণেশের আরাধনা করেন এবং অনেক বাড়িতেও পূজ হয়। এই দিন মন্দিরে মন্দিরে প্রচুর ভিড় হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এদিন সোনা কিনলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি ঘটে।
এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কয়েকটি পুরাণের কথা।
১. শোনা যায় মহাভারতে কৌরবদের কাছে পাশা খেলায় হেরে বারো বছরের জন্য বনবাস ও এক বছরের জন্য অজ্ঞাতবাসে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন পাণ্ডবরা। তাদের বনবাসে থাকার সময়ে ফের কৌরবদের চক্রান্তে মুনি দুর্বাসা তার শিষ্যদের নিয়ে এক রাতে পাণ্ডবদের আশ্রয় গ্রহণ করতে যান। কিন্তু সেই সময় তাদের ঘরে কোনও অন্ন ছিল না। ক্ষুধার্ত মুনি দুর্বাসা অভিশাপ দেবেন ভেবে ভয় পান পাণ্ডব ও দ্রৌপদী। ঠিক সেই সময়ে শ্রীকৃষ্ণ এসে হাঁড়ির তলায় লেগে থাকা একটিমাত্র চালের দানা খেয়ে নেন। আর অবাক করা বিষয়, তাতেই পেট ভরে যায় দুর্বাসা ও তাঁর শিষ্যদের। দুর্বাসার অভিশাপ থেকে এই অক্ষয় তৃতীয়ার দিনই পাণ্ডবদের রক্ষা করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। তাই এই দিনটিকে শুভ বলে মনে করা হয়।
২. শোনা যায়,অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেই পরশুরাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেজন্যেও এই দিনটি শুভ।
৩.আবার অন্য একটি চলতি পৌরাণিক কথা অনুসারে, বিষ্ণুর নবম অবতার কৃষ্ণ দ্বাপর যুগে জন্মগ্রহণ করেন মর্ত্যে। তার সুদামা নামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ বন্ধু ছিলেন। সুদামা একদিন ভুলবশত কৃষ্ণের সব খাবার খেয়ে ফেলেছিলেন। এরপর তিনি শ্রীকৃষ্ণকে খাবার দিতে একমুঠো চাল নিয়ে তার ঘরে আসেন। তাকে খাওয়ানোর জন্য বন্ধু সুদামার এই আচরণ মুগ্ধ করেছিল শ্রীকৃষ্ণকে। এরপর শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদে সুদামার সমস্ত দারিদ্র্য ঘুচে যায়। মনে করা হয় যেদিন এই ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন ছিল বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। তাই দিনটি বিশেষ শুভ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন