১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন রাজীব গান্ধী। দলীয় কর্মসূচিতে মাথাভাঙ্গা শহরে এসেছিলেন রাজীব গান্ধী। সেই সময়ই মাথাভাঙা শহরের প্রেমেরডাঙ্গা এলাকায় এক দোকান থেকে তার জন্য আনা হয়েছিল মন্ডা। এই মন্ডা এতদিন শুধু জেলা এবং রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এবার স্বাদে মজেছেন স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী। আর ঠিক তারপরেই অল্প দিনের মধ্যে এই মণ্ডার সুনাম সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
মাথাভাঙা শহরের এক নাম্বার ব্লকের প্রেমেরডাঙ্গা বাজারে গেলেই দেখা যায় বড় বড় হরফে লেখা স্বর্গীয় যতীন্দ্রমোহন দে'র মন্ডার দোকান। বছরভর ছোট্ট এই দোতলা দোকানে মন্ডার টানে ভিড় লেগেই থাকে।
বর্তমানে এই দোকানের শ্রী তরুণ কুমার ধর। তরুণ ধর একজন পেশায় স্কুল শিক্ষক হলেও ভালোবাসার টানে এই মন্ডা এখনো তৈরি করে যান। তরুণ ধরের থেকেই জানা যায় ১৮২৪ সালে তরুণ দে'র দাদু তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছ এলাকার বাসিন্দা স্বর্গীয় যতীন্দ্রমোহন দে সেখানকারী জনৈক গোপাল পাল নামের এক ব্যক্তির থেকে এই মন্ডা বানানোর পদ্ধতি রপ্ত করেছিলেন। দেশভাগের সময় তিনি তার পরিবার নিয়ে মাথাভাঙা শহরের এক নাম্বার ব্লকের প্রেমের ডাঙ্গায় চলে আসেন।
প্রেমের ডাঙ্গায় মন্দা বানানোর শুরু করেন তার দাদু ১৮৬০ সাল থেকে। দাদুর প্রয়ানের পর তার রপ্ত করা কৌশল থেকেই প্রায় তিন দশক ধরে তিনি মন্ডার ব্যবসা করে চলেছেন। সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে গরুর খাঁটি দুধের ছানা ও সামান্য পরিমাণ চিনি মিশিয়েই তৈরি হয় এই মন্ডা। তবে শীতের মরসুমে দেখা যায় ছানার সাথে খেজুর গুড় মিশিয়েও এই মণ্ডা তৈরি করেন।
বিভিন্ন জায়গায় যতই এই মণ্ডার খেতে ছড়িয়ে পড়ুক স্থানীয় বাসিন্দাদের একটাই আক্ষেপ এখনো এই মন্ডা জিআই ট্যাগের তকমা পায়নি বলে। অনেকেই বলেন দেশভাগ হয়ে যাওয়ার পরেও দুই দেশকে একই সুতোতে বেঁধে রেখেছেন এই মন্ডা। দ্রুত জিআই ট্যাগ পাওয়ার দাবি জানাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন