বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আগে ঘুষ দিতে হতো ১ লাখ টাকা, এখন দিতে হয় ৫ লাখ টাকা।’ তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, এ মন্তব্য দিয়েছেন দেশের একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী, যিনি শুক্রবার এই তথ্য তাঁর (মির্জা ফখরুলের) সঙ্গে ভাগ করে নেন।
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক বই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান রচিত ‘অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা: যাপিত জীবনের আলেখ্য’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন লেখক নিজেই, আর প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, “কোথাও কোনো সুশাসন নেই, কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। পুলিশ বিভাগে আজও কার্যকর কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে রাতারাতি সবকিছু পাল্টে ফেলা সম্ভব নয়, এর জন্য প্রয়োজন সময় ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা।”
তিনি আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক চর্চা ছাড়া কোনো বাস্তব সংস্কার সম্ভব নয়। কিছু চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে দেশের সমস্যার সমাধান হবে না। বিলম্ব না করে আমাদের এখনই একটি অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে হবে। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংসদে পাঠিয়ে সেখান থেকেই সংস্কার শুরু করতে হবে।”
আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপ ভবিষ্যতে আমাদের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত দেশের স্বার্থে ইতিবাচক ও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করা।”
অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “দেশে ভালো প্রতিষ্ঠান এখন খুঁজে পাওয়া ভার। আইনের লঙ্ঘন তো ঘটছেই, একইসঙ্গে নীতিগত প্রক্রিয়াগুলোকেও ধ্বংস করা হয়েছে। অথচ মানুষগুলো বদলায়নি। প্রতিষ্ঠান সংস্কারের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়েও আমূল পরিবর্তনের প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “অনেকে বলে, সব কিছু বাদ দিয়ে নতুন করে শুরু করা হোক। কিন্তু বাস্তবে সেটা সম্ভব নয়। আমাদের এখন 'মাথায় হাত বুলিয়ে কিংবা প্রয়োজনে ধমক দিয়ে' হলেও কাজ করিয়ে নিতে হবে।”
সুশাসন প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সংসদ সদস্য পর্যন্ত, কারো ক্ষমতার যথাযথ 'চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স' নেই। এই কাঠামোতে সংস্কার না আনলে যত পরিকল্পনাই করা হোক না কেন, কোনো বাস্তব উন্নয়ন সম্ভব হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরেও সময়োপযোগী সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন