হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে নিরাপত্তারক্ষীদের হস্তক্ষেপে অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই কাঞ্চনের শাশুড়ি ওই হাসপাতালের চিকিৎসাধীন। বুধবার শাশুড়িকে ফলোআপ চেকআপের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান কাঞ্চন ও তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হাসপাতাল কর্মীদের দাবি, কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick) সরাসরি একটি চিকিৎসককে অনুরোধ করেন সঙ্গে সঙ্গে শাশুড়িকে দেখে দেওয়ার জন্য। তবে সেই সময় চিকিৎসক অন্য একজন রোগীকে দেখছিলেন। তিনি কাঞ্চনকে জানান, চলতি রোগীটি দেখা শেষ হলেই তিনি কাঞ্চনের শাশুড়িকে দেখে দেবেন।
এই কথাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কাঞ্চন। অভিযোগ, কোনও কথা না শুনেই চিকিৎসকের দিকে ধেয়ে যান তিনি। প্রথমে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়, তারপর চিকিৎসকের কলার চেপে ধরেন এবং হুমকি দেন যে, তাঁকে বদলি করে দেওয়া হবে। উপস্থিত রোগী ও হাসপাতাল কর্মীরা পরিস্থিতি দেখে হতবাক হয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং এই ধরনের আচরণ চিকিৎসা পরিষেবার পরিবেশের পক্ষে বিপজ্জনক।
একজন সিনিয়র ডাক্তার বলেন, "আমরা প্রতিদিন শতাধিক রোগী দেখি। প্রতিটি রোগীর জন্য সময় লাগে। হঠাৎ করে কেউ এসে চিকিৎসকের উপর এই ধরনের আচরণ করলে আমরা কীভাবে পরিষেবা দেব?" হাসপাতাল সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।
তবে কাঞ্চন মল্লিক এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, "আমি কাউকে মারধর করিনি। শুধু অনুরোধ করেছিলাম একটু তাড়াতাড়ি দেখা হোক। মা'র অবস্থা একটু খারাপ ছিল, তাই একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম।" তবে ঘটনার পর থেকেই এই বিতর্ক ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তৃণমূলের অন্দরমহলেও এই ঘটনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, একজন জনপ্রতিনিধির থেকে আরও সংযত আচরণ কাম্য, আবার কেউ কেউ দাবি করেছেন, বিষয়টি অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। তবে হাসপাতালের তরফে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
এই ঘটনায় ফের একবার আলোচনার কেন্দ্রে চলে এলেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। চিকিৎসকদের উপর ক্রমাগত বাড়তে থাকা হুমকি ও আক্রমণের ঘটনাগুলির পটভূমিতে এই ঘটনা আরও একবার দেখিয়ে দিল, চিকিৎসাক্ষেত্রে নিরাপত্তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার, এই ঘটনার পর কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন