Top News

ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়: অভিশাপের একুশ বছর



একুশ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও অনেকেরই চোখে এখনও জ্বলজ্বল করছে। তার প্রমাণ আমরা আজকে ইন্টারনেট খুললেই পেতে পারি। অনেকেরই মনে হতে পারে এতোদিন পরে এই ঘটনা নিয়ে কথা বলা অপ্রাসঙ্গিক। তবে তাজা ঘটনাই কেবল প্রাসঙ্গিক বলে গণ্য করা হবে এমন কথা অর্থহীন। বলতে চাইছি 'ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়' এর কথা। যাঁর ফাঁসি হয় ২০০৪ সালের ১৪ই আগস্ট, ১৪ বছর কারাবাসের পর। 

গুরুচণ্ডালি থেকে প্রকাশিত গ্রন্থ


১৯৯০ সালে একজন কিশোরী, হেতাল পারেখকে ধর্ষণ ও খুনের অপরাধে অভিযুক্ত বাঁকুড়ার কুলডিহি গ্রামের ধনঞ্জয়। দক্ষিণ কোলকাতার ভবানীপুরে হেতালদের ফ্ল্যাটবাড়িরই নীচে সিকিউরিটির কাজে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। আদালত বললেন "বিরলের মধ্যে বিরলতম" অপরাধ। অতএব মৃত্যুদণ্ড।



বিতর্কের রেশ কিন্তু আজও কাটেনি। প্রথম থেকেই বিতর্কিত। সেই আগুন এখনও জ্বলছে।বরং ছড়িয়ে পড়ছে আরও। গত দু দশকে একটি অত্যন্ত গবেষণা করে লেখা বই ও একটি চলচ্চিত্র বেরিয়েছে এই বিষয়ের ওপর। এছাড়া নানান প্রসঙ্গে বারাবার ফিরে এসেছেন ধনঞ্জয়। গুরুচণ্ডালি প্রকাশনার 'আদালত-মিডিয়া-সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি' বইটি অবশ্য পাঠ্য। কোনও পক্ষ না নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের মামলার গলদ বা অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেছেন এই বইয়ের লেখক ত্রয়ী। সেই 'ভুল' গুলি চোখে পড়লে সত্যিই মনে প্রশ্ন জাগে... আদৌ সে দোষী ছিলো তো?কোনো উদাসীনতার কারণে অসহায় একজনের প্রাণ চলে গেলো না তো? পৃথিবীর অনেক দেশেই ভুল লোককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পরে জানা গেছে তাঁরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। এ ক্ষেত্রে একজনের ফাঁসি হলো পুরোপুরি আবস্থিক প্রমাণকে( circumstantial evidence) সম্বল করে। ব্যাপারটা কি পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন ছিলো না? বহু দিন কেটে গেছে। অনেক কিছুই বদলে গেছে। কিন্তু সমাজটা পল্টায়নি। এখনও 'ধনঞ্জয়' বিষয়ক নানাবিধ পোস্ট করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়, এবং তাতে ৮০ শতাংশ মানুষের মন্তব্য থাকে মামলাটি 'রি-ওপেন' করার দাবী জানিয়ে!


দুটি দশক পরেও সাধারণ মানুষের একাংশ ব্যাপারটি নিয়ে সরব। হয়তো পরিস্থিতি - পরিবেশের কারণে কিছু করতে পারছেন না। কিন্তু যদি সত্যিটা যাচাই করে সামনে আনা যায়, নিশ্চিতভাবে একটি শিক্ষণীয় বার্তা পৌঁছোবে সকলের কাছে। 
আলিপুর সংশোধনাগারের সামনে ধনঞ্জয়ের ফাঁসির বিরুদ্ধে তৎকালীন আন্দোলন


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন