শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতে আবারও ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সময়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধের প্রায় ১১০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ইতিমধ্যে অন্তত ৩০টি বসতঘর নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান জানান, “ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা শুরু হয়েছে, তবে প্রবল স্রোত ও বৃষ্টির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে।”
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মনোয়ার হোসেন বলেন, “ভোররাতে বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি নদীর পাড় ধসে পড়ছে। মুহূর্তেই দুটি ঘর নদীতে চলে গেল।”
আরেক ভুক্তভোগী শাহীন মাদবর বলেন, “বসতঘর হারিয়েছি, এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। সরকারের কাছে সহায়তা চাই।”
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের মোল্লা জানান, “চোখের সামনে নদীতে ভেঙে পড়েছে দুটি বসতভিটা। মুহূর্তেই মাটি গিলে খেয়েছে নদী।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে প্রায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল দুই কিলোমিটার দীর্ঘ রক্ষা বাঁধ। কিন্তু কয়েক দফা ভাঙনে এর ৭৫০ মিটার অংশ ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হলেও তা স্রোতের মুখে কার্যকর হচ্ছে না।
প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, “স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে আগামী বর্ষার আগেই নতুন করে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।”
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। যারা জমি ও ঘর হারিয়েছেন, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন