বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাঘরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন মঞ্চ ’৭১-এর এক সভায় হামলা চালায় স্বাধীনতা বিরোধী দল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী এবং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীপন্থী ছাত্র-যুবদের একাংশ সভা চলাকালীন হঠাৎ প্রবল আক্রমণ শুরু করে। প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে অশ্রাব্য গালাগালি, ধাক্কাধাক্কি চলে। এরপর জোর করে তাঁদের সভাঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। ফলে সভা কার্যত ভণ্ডুল হয়ে যায়।
চলতি মাসেই মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন এবং জেড আই খান পান্নার উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ ঘটে সংগঠনটির। গত ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদিনে এই সংগঠনের উদ্যোগেই হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান স্থপতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিল।
বৃহস্পতিবারের সভার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল বাংলাদেশের সংবিধান রক্ষা। সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ১৯৭২ সালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রণীত সংবিধানের মৌলিক বিধান কোনওভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না। বাদ দেওয়া যাবে না ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের মতো মূল শব্দ। জনমত গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এদিনের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল।
কিন্তু প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্না এবং কামাল হোসেন সভাস্থলে পৌঁছানোর আগেই হামলা শুরু হয়।
নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হওয়া মুক্তিযোদ্ধা এবং আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীও আক্রান্ত হওয়ার মুখে পড়েন। তাঁকে ঘিরে চলে অকথ্য গালাগালি। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জেড আই খান পান্না এক বিবৃতিতে বলেন, “বৃহস্পতিবার আরও একবার প্রমাণিত হল বাংলাদেশে বাক স্বাধীনতা বলে কিছু নেই।”
এই হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার আন্দোলনকে স্তব্ধ করার প্রচেষ্টা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন