Top News

ধ্বসের কারনে বন্ধ বৈষ্ণো দেবী যাত্রা, ভোগান্তিতে পর্যটকেরা




NT Bangla: কিছুদিন ধরে  টানা ভারী বৃষ্টিপাতে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জম্মু-কাশ্মীর । প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, তীব্র বৃষ্টিতে পাথর ও ধ্বংসাবশেষে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হবে। নেটওয়ার্ক পরিষেবা প্রায় সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।



আর কিছুদিন পরই পুজো । পুজো মানেই একটা বড় সংখ্যক বাঙালির বেড়াতে যাওয়ার মরশুম। এবার পুজোতেও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনাঅনেকেই করে রেখেছেন অনেক আগে থেকে। সেই পরিকল্পনায় জম্মু-কাশ্মীর, বা হিমাচল, বা উত্তরাখণ্ড ও রয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আগামী মাসে সেই পরিকল্পনা বাতিল করছেন অনেকেই।

ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলি জানাচ্ছে, পুজোয় উত্তর ভারতের বহু প্রোগ্রামই বাতিল করা হচ্ছে। কিছু তাদের তরফ থেকে, কিছু আবার পর্যটকরা নিজেরাই বাদ দিচ্ছেন। কারণ পাঞ্জাব থেকে শুরু করে কাশ্মীর পর্যন্ত একাধিক এলাকা যেভাবে বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত, যেভাবে বিপর্যস্ত জনজীবন, তাতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা বিশেষ নেই।



তার থেকেও বড় চিন্তা, যেভাবে পথঘাট ভেঙে গেছে, ব্রিজগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে সব সারাই করে ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হতেও বেশ খানিকটা সময় লাগবে। তার উপর আগামী একমাসে আরও বেশি বৃষ্টি হবে কিনা, তারও কোনও নিশ্চয়তা নেই। আবহাওয়ার পূর্বভাস বলছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা নেই। 

এদিকে কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, 'যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত নেই। কেবল অল্প কিছু ডেটা জিও-তে আসছে। ওয়াইফাই নেই, ব্রাউজিং বন্ধ, সোশ্যাল মিডিয়া চালানো যাচ্ছে না। ২০১৪ ও ২০১৯ সালের ভয়াবহ দিনগুলোর মতো বিচ্ছিন্ন লাগিরে'। 


জম্মু অঞ্চলে একাধিক সেতু ভেঙে পড়েছে, বহু সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রেলপথও বিপর্যস্ত। কাটরা, উদমপুর ও জম্মু থেকে অন্তত ১৮টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বৈষ্ণো দেবী যাত্রা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বৈষ্ণো দেবী মন্দিরের পথে ভয়াবহ ভূমিধসে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ২০ জনের বেশি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আঢকুয়ারি এলাকার ইন্দ্রপ্রস্থ ভোজনালয়ার কাছে ১২ কিমি দীর্ঘ তীর্থপথের মাঝামাঝি অংশে বিপর্যয় নেমে আসে। ধ্বংসস্তূপে এখনও অনেকে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা। উদ্ধারকাজে এনডিআরএফ, সেনা ও রাজ্য প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করছে।


বুধবার সকালে হিন্দন এয়ারফোর্স স্টেশন  থেকে এনডিআরএফ সামগ্রী বহনকারী আইএএফ-এর সি-১৩০ পরিবহণ বিমান জম্মু পৌঁছেছে। এছাড়া চিনুক ও এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে জম্মু, উধমপুর, শ্রীনগর ও পাঠানকোটে। প্রবল বর্ষণে দোদা জেলায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে, বহু ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। চেনাব নদীর জল বাড়ায় বিপদের মুখে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ পুল দোদা সেতু, যা দোদাকে কিস্তওয়ার-বাটোটি জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত করে।


আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিন আরও বৃষ্টি ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি যাতে আর ভয়ঙ্কর না হয়, তাই আগেই নিম্নাঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, আঞ্চলিক পরিস্থিতি সামলাতে জেলা প্রশাসন রাতের দিকে চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।


হিমালয় অঞ্চলের পরিবেশবিদদের মতে, অযত্নে পাহাড়ি এলাকায় নির্মাণকাজ ও পরিবেশবিধ্বংসী উন্নয়নই আজকের এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন