মানসিক স্বাস্থ্য কী
মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের আবেগগত, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা বোঝায়। এটি আমাদের চিন্তা, অনুভূতি এবং আচরণকে প্রভাবিত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায় যে, মানসিক স্বাস্থ্য কেবল মানসিক রোগ বা অক্ষমতার অনুপস্থিতিই নয়। এটি আমাদের মনের চিন্তা, আচরণ ও আবেগের একটি সম্মিলিত অবস্থা। আমরা দৈনন্দিন জীবনে কী ভাবি, কীভাবে জীবনের চারপাশকে বুঝি বা মানিয়ে নিই—এসবই মানসিক স্বাস্থ্যের অংশ। একজন মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি নিজেকে নিয়ে ভালো ভাবেন এবং রাগ, ভয়, ঈর্ষা, অপরাধবোধ বা দুশ্চিন্তার মতো আবেগে সহজে ভেঙে পড়েন না। বরং তিনি সেসব আবেগকে সামলাতে সক্ষম হন।
⸻
মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য ও সূচকসমূহ:
মানসিক স্বাস্থ্য সংজ্ঞা থেকেই এর কিছু বৈশিষ্ট্যের ধারণা পাওয়া যায়। ১৯৫৮ সালে জাহোডা (Jahoda) মানসিক স্বাস্থ্যের ছয়টি সূচক চিহ্নিত করেন:
১. নিজের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব
২. বিকাশ, উন্নয়ন ও আত্ম-উপলব্ধি
৩. সমন্বয় ও সামঞ্জস্যতা
৪. স্বনির্ভরতা
৫. বাস্তবতা উপলব্ধি করার ক্ষমতা
৬. পরিবেশকে আয়ত্তে নেওয়ার দক্ষতা
⸻
মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্যসমূহ:
১. আত্ম-মর্যাদা ও আত্ম-গ্রহণযোগ্যতা
২. কার্যকর আত্ম-উপলব্ধি
৩. আচরণ নিয়ন্ত্রণের অন্তর্দৃষ্টি
৪. উৎপাদনশীলতা ও সৃজনশীলতা
৫. আবেগগত স্থিতিশীলতা
⸻
মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব:
শরীর ও মন একে অপরকে পরিপূরক করে। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে মানসিকভাবেও সুস্থ থাকা জরুরি। মানুষ জীবনে নানান সমস্যার মুখোমুখি হয়, হতাশায় ভোগে, দুঃখ পায়, সমাধান খুঁজে পায় না—এই সব পরিস্থিতিতে মানুষকে নিজের উপরই ভরসা রাখতে হয় এবং নিজের শক্তিকে আঁকড়ে ধরতে হয়। এজন্য মানসিক স্বাস্থ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একজন মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি সমস্যাগুলো বুঝে এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তার মোকাবিলা করতে পারেন।
মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য উভয়ই সামগ্রিক সুস্থতার জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে আপনি কাজ করার জন্য অনেক শক্তি ও উৎসাহ পান, তেমনি মানসিকভাবে সুস্থ থাকলেও আপনি জীবনের বিভিন্ন কাজ সজাগভাবে করতে পারেন।
সুস্থ মানসিকতা মানে ১০০% আত্মবিশ্বাসী বা পুরোপুরি সুখী হওয়া নয়—বরং এটি জীবনের সমস্যা মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন