Top News

শুভ মহালয়া ২০২৫: কলকাতার ভোরে দেবী পক্ষের সূচনা

 


আজ, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫। কলকাতার ভোরে আবারও মহালয়ার সুরে ঘুম ভেঙেছে। অন্ধকার কাটিয়ে যখন প্রথম আলোর আভা ধীরে ধীরে গঙ্গার বুকে ছড়িয়ে পড়ছিল, ঠিক তখনই রেডিও, টেলিভিশন আর সামাজিক মাধ্যমে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল মহিষাসুরমর্দিনীর স্তোত্র। শহরের প্রতিটি অলিগলিতে, ঘরের কোণায় কোণায় সেই সুর যেন ভক্তিমিশ্রিত আবহ তৈরি করেছে।

কলকাতার মানুষের কাছে মহালয়া শুধু একটি দিন নয়, এটি এক সাংস্কৃতিক ও আবেগঘন উৎসবের সূচনা। দেবী পক্ষের প্রথম দিন হিসেবে আজ থেকে শুরু হলো দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক কাউন্টডাউন। গঙ্গার ঘাটে আজ ভোর থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন হাজারো মানুষ। পুজো, প্রদীপ প্রজ্বলন আর তর্পণের মাধ্যমে তাঁরা প্রয়াত পূর্বপুরুষদের স্মরণ করেছেন।

এ শহরের মহালয়া মানেই রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে মহিষাসুরমর্দিনী—এ এক নস্টালজিয়া, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে। আজও ভোর পাঁচটার সময় অসংখ্য মানুষ আকাশবাণীর সেই সম্প্রচার শোনার জন্য নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।

কলকাতার রাস্তায় ইতিমধ্যেই পুজোর আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। শহরের সর্বত্র চলছে প্যান্ডেল সাজানোর কাজ, দেবীর প্রতিমা গড়ার শেষ প্রস্তুতি। বাজারে ভিড় বেড়েছে নতুন পোশাক কেনাকাটায়। মহালয়ার সকাল শহরবাসীর মনে নতুন উদ্দীপনা জাগিয়েছে—আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা, তারপরেই শহর ডুবে যাবে পাঁচ দিনের বর্ণিল উৎসবে।

আজকের দিনে শহরের থিম প্যান্ডেল, আলোর শোভাযাত্রা কিংবা শিল্পীদের নিপুণ হাতে গড়া প্রতিমার আভাস স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কলকাতা যেন ধীরে ধীরে রঙিন হয়ে উঠছে, প্রাণ ফিরে পাচ্ছে "সিটি অফ জয়"।

শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, মহালয়া কলকাতার কাছে এক সাংস্কৃতিক পুনর্জন্মের মতো। দেবী পক্ষের সূচনার সঙ্গে সঙ্গে শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে এক অন্যরকম আবেগ, যা শুধু কলকাতাই অনুভব করতে জানে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন