দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পুনরায় চালু হতে চলেছে ভারত ও চীন-এর সরাসরি যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা। ২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে এক বিবৃতিতে জানান হয়েছে অক্টোবরের শেষের দিক থেকে নির্ধারিত রুটে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হবে। এই পদক্ষেপটিকে দুই দেশের সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারি এবং লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনার কারণে ২০২০ সালের পর থেকে বন্ধ ছিল ভারত ও চীন-এর সরাসরি যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা। তবে এবছর জানুয়ারি ও আগস্ট মাসে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা পুনরায় চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। পরবর্তীতে, দুই দেশের বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়, যার ফলস্বরূপ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুরুতে, ভারতের বিমান সংস্থা ইন্ডিগো ২৬ অক্টোবর থেকে কলকাতা–গুয়াংঝৌ রুটে দৈনিক ফ্লাইট চালু করবে। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, অনুমোদন পাওয়ার পর শীঘ্রই দিল্লি–গুয়াংঝৌ রুটেও বিমান চালু হবে। এ বিষয় ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা গর্বিত যে ভারতের দুটি শহর থেকে চীনের সঙ্গে পুনরায় সরাসরি বিমান সংযোগ চালু করার মধ্যে আমরা প্রথম।..”
বিশেষজ্ঞদের মতে, পুনরায় বিমান চলাচল চালু হওয়ার ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উন্নতি হবে। দীর্ঘ পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর সরাসরি বিমান পরিষেবা চালু হওয়ায় উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং সম্পর্কের উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রকের যৌথ আলোচনার পর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২০২৫ সালের অক্টোবরের শেষ নাগাদ ভারত ও চীনের মনোনীত শহরগুলির মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু হতে পারে। তবে এটি দুই দেশের মনোনীত বিমান সংস্থাগুলির বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত এবং সব ধরনের কার্যক্রমগত শর্ত পূরণের ওপর নির্ভর করবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটন ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্র বিশেষভাবে উপকৃত হবে বলে সরকারি সূত্রের অভিমত।
পাঁচ বছর বন্ধ থাকার ফলে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ভ্রমণ কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল। যাত্রীদের বিকল্প পথে যাতয়াত করতে হয়েছে, যার ফলে সময় ও খরচ উভয়ই বেড়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরাসরি বিমান পুনরায় চালু হওয়ায় শুধু মানুষের মধ্যে সম্পর্কই জোরদার হবে না, বরং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এই সিদ্ধান্ত ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভারত–চীন আকাশপথ পুনরায় খোলার এই পদক্ষেপকে উভয় দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন