এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,৩০ অক্টোবর : জিহাদি আন্দোলন থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে ভারতে পালিয়ে আসা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে তিনি ভারতে স্বাধীনভাবে ও নিরাপদে বসবাস করছেন এবং তিনি আর বাংলাদেশে ফিরে যাবেন না। রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দিল্লিতে স্বাধীনভাবে কিন্তু নিরাপদে বসবাস করছেন এবং ভারত ত্যাগ করার কোনও ইচ্ছা তাঁর নেই।
আগামী বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে চলা জাতীয় নির্বাচন, আওয়ামী লীগ দলের ভবিষ্যৎ,তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এবং তার দেশে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদি সেখানকার সরকার বৈধ হয়, সংবিধান সমুন্নত রাখে এবং আইনশৃঙ্খলা সত্যিকার অর্থে বিরাজ করে, তাহলে আমি বাংলাদেশে যেতে আগ্রহী।’ একইভাবে, শেখ হাসিনা বলেন যে আওয়ামী লীগের উপর নিষেধাজ্ঞা কেবল অন্যায্যই নয়, বরং আত্মপরাজয়ের কারণও বটে। “যদি তার আওয়ামী লীগ দলকে ২০২৬ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেওয়া হয়, তাহলে তার লক্ষ লক্ষ সমর্থক বাংলাদেশে নির্বাচন বয়কট করবে। লক্ষ লক্ষ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে, তাই যদি তা হয়, তাহলে তারা ভোট দেবে না । শেখ হাসিনা সতর্ক করে দেন, যদি আপনি একটি কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা চান, তাহলে আপনি লক্ষ লক্ষ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে পারবেন না ।’
বাংলাদেশে সিভিল সার্ভিস কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছাত্রদের আন্দোলনের নামে ইসলামি জিহাদি শক্তির অভ্যুত্থান ঘটার পর গত বছরের আগস্টে ৭৮ বছর বয়সী নেত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে দিল্লিতে পালিয়ে আসেন । বর্তমানে তিনি দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছেন। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে শাসন করছে।
শেখ হাসিনা, তার সরকার এবং তার দলের বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছে বর্তমান সরকার । এই মামলার বিচার ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ শেষ হয়েছে, যেখানে সরকারি আইনজীবী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছেন।
গত বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে বাংলাদেশে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছিলেন, যখন চাকরিতে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেখ হাসিনার শাসনকালের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। যদিও হাসিনা সরকার পরে কোটা প্রত্যাহার করে নেয় । কিন্তু ইসলামি চরমপন্থীদের উদ্দেশ্য ছিল হাসিনাকে উৎখাত করা । সেই লক্ষ্যে হাসিনার বাসভবনে হামলার কিছু আগেই তিনি সেনার হেলিকপ্টারে ভারতে পালিয়ে আসেন ।
বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসার পর শেখ হাসিনা এই প্রথম গণমাধ্যমের সাথে আলাপচারিতা করলেন, যদিও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত বার্তা পাঠান । এদিকে ইউনূস সরকার ঘোষণা করেছে যে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । কিন্তু হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে নির্বাচনে লড়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান তদারকি সরকার । যদিও হাসিনা বলেছেন,’আওয়ামী লীগ একসময় বাংলাদেশের ভবিষ্যতে আবারও ভূমিকা রাখবে সরকারে হোক কিংবা বিরোধী দলে এবং দলটির নেতৃত্ব তার পরিবার থেকে আসা জরুরি নয়।’।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন