Aditya Adhikari
কখনও কখনও একটা ইনিংসই পুরো দেশের অনুভূতি বদলে দেয়। বিশ্বে ভারতীয় শুধু ছেলেরাই নয় , মেয়েরাও ক্রিকেট এ এগিয়ে তা আবার ও প্রমাণ করেদিলেন জেমিমা রদ্রিগেজ। অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বের সেরা দলের বিরুদ্ধে তিনি এমন এক ইনিংস খেললেন, যা শুধু ক্রিকেট নয়, এক অনুপ্রেরণার গল্প হিসেবেও মনে রাখা হবে বহুদিন।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল—দল চাপে, স্কোরবোর্ডে ভারী লক্ষ্য ৩৩৯ রান, আর ড্রেসিং রুমে নেমে এসেছে নীরবতা।
![]() |
| শতকের উল্লাসে জেমি। ছবি - সংগৃহীত |
তখনই ক্রিজে নামেন জেমিমা। শুরুতে বল ব্যাটে লাগছিল ঠিকই, কিন্তু গতি পাচ্ছিল না ইনিংস। তবে তাঁর মুখে একটাও ভয়ের ছাপ ছিল না। ধীরে ধীরে তিনি নিজের ছন্দ খুঁজে নেন—সিঙ্গেল, ডাবল, আর মাঝে মাঝে চোখ ধাঁধানো কভার ড্রাইভে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে নেন।
যখনই মনে হচ্ছিল ভারত ম্যাচ থেকে পিছিয়ে পড়ছে, জেমিমা তখনই এক একটি শটে জানিয়ে দিচ্ছিলেন—"এখনও শেষ হয়নি"!
ক্যাপ্টেন হারমনপ্রীত কৌর-এর সঙ্গে তাঁর ১৬৭ রানের পার্টনারশিপ ছিল ম্যাচের হৃদস্পন্দন। দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়াটা এতটাই নিখুঁত ছিল যে মনে হচ্ছিল তারা একে অপরের ভাবনা বুঝে ফেলছেন বল ছাড়ার আগেই।
একজন নেতৃত্ব দিলেন অভিজ্ঞতায়, আর অন্যজন খেললেন হৃদয় দিয়ে।
শেষ দিকে যখন ম্যাচ ভারসাম্যে, তখনও জেমিমা ছিলেন সম্পূর্ণ ঠান্ডা মাথায়। বল যতই গতি নিচ্ছিল, তাঁর আত্মবিশ্বাস ততই বেড়েছিল।শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ১২৭ রানে মাঠ ছাড়েন জেমিমা।না, এটা কেবল সংখ্যার গল্প নয়।
এটা ছিল সাহস, মানসিক শক্তি, এবং আত্মবিশ্বাসের এক নিঃশব্দ বিপ্লব।তিনি জানতেন—এই ইনিংস তাঁর ক্যারিয়ারই নয়, ভারতীয় নারী ক্রিকেটের ভবিষ্যতও বদলে দিতে পারে।
কিছুদিন আগেও তিনি দলে নিজের জায়গা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিলেন। একাধিক ম্যাচে সুযোগ পেলেও বড় রান আসছিল না।সমালোচকরা বলতে শুরু করেছিলেন, “জেমিমা আগের মতো নেই।”
কিন্তু তিনি থামেননি। প্রতিদিন নিজেকে আরও শক্ত করেছেন—মাঠে, জিমে, এবং মানসিকভাবে।এই সেমিফাইনালের ইনিংস যেন ছিল তাঁর নিজের কাছে দেওয়া এক উত্তর।
![]() |
| ম্যাচের শেষে আনন্দে কান্নায় ভেঙে পরলেন জেমি। ছবি - সংগৃহীত |
ম্যাচের শেষে তিনি বলেন - আমি আমার মা-বাবা, কোচ, আর প্রতিটি মানুষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছেন। গত এক মাসটা খুব কঠিন ছিল… আজকের এই জয় যেন একটা স্বপ্নের মতো লাগছে, এখনো পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারছি না।”
“আমি অনেক মানসিক চাপে ছিলাম… অনেক সময় মাকে ফোন করে কেঁদেছি। যখন কেউ উদ্বেগে ভোগে, তখন মনে হয় চারপাশে অন্ধকার, কিছুই বোঝা যায় না। কিন্তু আমি ভাগ্যবান যে আমার চারপাশে এমন বন্ধু আছে যারা পরিবার হয়ে পাশে থেকেছে। আমি একা ছিলাম না, আর আমি আজ সবাইকে বলতে চাই — সাহায্য চাইতে ভয় পেও না।”
“আজ আমি আমার শতকের জন্য খেলিনি, কোনো কিছু প্রমাণ করার জন্যও নয়। আমি খেলেছি শুধু ভারতের জন্য — যাতে দল জেতে। যখন তোমার উদ্দেশ্য ভালো থাকে, তখন ঈশ্বরও তোমার পাশে থাকেন।”


.jpeg)
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন