উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে এক মহিলার অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনে। ওই যুবতী থানায় অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন গণধর্ষণের, কিন্তু অভিযোগ, সেখানে তিনি বিচার পাননি; উল্টে তাঁকে নতুন করে শিকার হতে হয়েছে বর্বরতার। অভিযোগের তির সরাসরি দুই সাব-ইনস্পেক্টরের দিকে, যাঁদের দ্রুত সাসপেন্ড করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, নভেম্বর মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক যুবকের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। যুবতী দাবি করেছেন, তাঁকে দেখা করার নাম করে ভুলিয়ে একটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরও চারজন সঙ্গী ছিল। এরপর একটানা ৪৮ দিন তাঁকে আটকে রেখে লাগাতার যৌন নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। কেবল বুলন্দশহর নয়, আলিগড়ের বিভিন্ন গোপন ডেরায় নিয়ে গিয়ে তাঁর ওপর অত্যাচার চালানো হয় এবং তাঁকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। অবশেষে সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচেন ওই যুবতী এবং অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেন।
এরপরই শুরু হয় আরও ভয়াবহ কাণ্ড। যুবতীর অভিযোগ, থানায় বিচার চাইতে গেলে দুই সাব-ইনস্পেক্টর তাঁর সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন এবং টাকা তোলার চেষ্টা করেন। এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি হোটেল রুমে ডেকে যুবতীকে দুই দিনে পাঁচবার ধর্ষণ করেছেন। অন্যজন অভিযুক্তদের ধরিয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে ৫০,০০০ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ।
এখানেই শেষ নয়, নির্যাতিতার স্বামীকেও নাকি থানায় বসিয়ে রেখে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। যুবতী আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি বাইকে করে আসা দুই দুষ্কৃতী তাঁকে আক্রমণ করে পালিয়ে যায়, কিন্তু পুলিশ সেই ঘটনার রিপোর্টও নেয়নি।
বুলন্দশহরের এসএসপি দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, মহিলা চারজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন। তদন্তে দেখা যায়, কেবল ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে পরিচয় হওয়া যুবকই ঘটনায় জড়িত। তাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে। বাকি তিন অভিযুক্তের কল ডিটেইলস এবং লোকেশন ঘটনার সঙ্গে মিলছে না।
এসএসপি বলেন, "পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর, তাই দ্রুত দুই সাব-ইনস্পেক্টরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে মহিলা বারবার তাঁর বয়ান বদল করছেন এবং পুলিশকর্মীদের নাম উল্লেখ করে এখনও আনুষ্ঠানিক এফআইআর দায়ের করতে রাজি নন, যার ফলে তদন্তে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।"
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন