আবারও দুর্ভোগের কালো মেঘ! সপ্তাহান্তের স্বস্তি কেড়ে নিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতু ফের বন্ধ থাকার চরম সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। মহানগরী কলকাতা এবং শিল্পনগরী হাওড়ার মধ্যে সংযোগকারী এই অতি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী আচমকা স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার খবরে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে নিত্যযাত্রী এবং পরিবহন ব্যবসায়ীদের মধ্যে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে যে, জরুরি এবং দীর্ঘদিনের বকেয়া রক্ষণাবেক্ষণ সম্পন্ন করার জন্যই এই কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে তারা।
আর তাই, এই রবিবার, নভেম্বর মাসের ২৩ তারিখ, সকালের প্রথম প্রহর থেকেই দুপুর অবধি এই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। কলকাতার দিকে প্রবেশ হোক বা হাওড়ার দিকে যাওয়া — উভয় প্রান্তের যাত্রীদেরই পড়তে হবে চরম ভোগান্তির মুখে। শেষ মুহূর্তে এই ধরনের আকস্মিক ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই শহরবাসীর পরিকল্পনাকে ওলটপালট করে দিয়েছে, যার ফলে রবিবার ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও অসংখ্য মানুষ এখন বিকল্প পথের সন্ধানে উদ্বিগ্ন।
সেতু কর্তৃপক্ষের সূত্রে খবর, বিদ্যাসাগর সেতুর মূল কাঠামোর নিচে অত্যন্ত সংবেদনশীল কিছু মেরামতের কাজ বাকি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিয়ারিং এবং এক্সপ্যানশন জয়েন্টগুলির সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এই কাজটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং ঝুঁকিবিহীনভাবে সম্পন্ন করতে গেলে সেতুর উপর গাড়ির চাপ সম্পূর্ণভাবে মুক্ত রাখা আবশ্যক। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে এই রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধা হলেও, সেতুর দীর্ঘমেয়াদি আয়ু এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য।
যারা এই দিনটিতে দ্বিতীয় হুগলি সেতু ব্যবহার করে যাতায়াত করার কথা ভাবছিলেন, তাদের জন্য স্পষ্ট নির্দেশ: হয় হাওড়া ব্রিজ (রবীন্দ্র সেতু) ব্যবহার করুন, নতুবা দূরে অবস্থিত নিবেদিতা সেতুর ব্যবহার করুন ।
কিন্তু মহানগরীর হৃদপিণ্ড স্বরূপ এই সেতুর উপর প্রতিবার এমন সাময়িক নিষেধাজ্ঞার ফলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার যে বিরাট চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়, তাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে পুলিশেরও। আপাতত, এই মহাগুরুত্বপূর্ণ কাজের জেরে রবিবার সকালটা শহরবাসীর কাছে হতে চলেছে এক বিকল্প পথের দূর্গতি , যা শেষ না হওয়া পর্যন্ত জনজীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন