নভেম্বরের শেষ লগ্নে এসেও শীতের আগমন নিয়ে বাংলার বুকে তৈরি হলো চরম অনিশ্চয়তা। বঙ্গোপসাগরের বুকে জোড়া ঘূর্ণাবর্তের দাপাদাপিতে আপাতত থমকে গেল শীতের গতি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড় 'দিতওয়া'-র প্রভাবে রাজ্যে সরাসরি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা না থাকলেও, এর জেরে এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গেছে রাতের তাপমাত্রা, যার ফলে আপাতত উধাও শীতের আমেজ।
কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতে এই মুহূর্তে আকাশ থাকবে মোটের উপর পরিষ্কার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প প্রবেশ করায় উত্তুরে হাওয়ার পথ কার্যত রুদ্ধ। এর ফলস্বরূপ, বৃহস্পতিবারের (২৭ নভেম্বর) তুলনায় আজ, শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেশ কিছুটা বেড়েছে। গতকাল যেখানে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল, আজ তা বেড়ে প্রায় ১৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা স্বাভাবিকের কাছাকাছি। আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রার এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকবে বলে জানা গেছে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ৪-৫ দিন দক্ষিণবঙ্গের কোথাও বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাস নেই। দিনের বেলা শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকলেও, ভোরের দিকে কিছু জেলায় হালকা কুয়াশা দেখা যেতে পারে। তবে এই উষ্ণতার বৃদ্ধি শীতপ্রেমীদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে।
শুধুমাত্র দক্ষিণবঙ্গেই নয়, উত্তরবঙ্গের আবহাওয়াতেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব স্পষ্ট। উত্তরের পার্বত্য এলাকা ছাড়া অন্য জেলাগুলিতে আপাতত শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকবে। এখানকার তাপমাত্রা আগামী কয়েক দিন সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও ডিসেম্বরের আগে জাঁকিয়ে শীত পড়ার সম্ভাবনা কম।
বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ঘনীভূত হওয়া ঘূর্ণিঝড় 'দিতওয়া' বর্তমানে শ্রীলঙ্কা উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করছে। এই ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে রবিবার (৩০ নভেম্বর) উত্তর তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি কোনো প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের ওপর না পড়লেও, এর প্রভাবে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শীতের প্রবেশে দেরি হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে এবং ফের অবাধে উত্তুরে হাওয়া ঢুকলে রাজ্যে জাঁকিয়ে শীত অনুভূত হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন