দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের (Delhi Blast) তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়। উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) সূর্যাপুর বাজার এলাকা থেকে শুক্রবার সকালে এক মেডিক্যাল ছাত্রকে গ্রেফতার করল এনআইএ (NIA arrests medical student)।
ধৃতের নাম নিশার আলম, হরিয়ানার আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএস ছাত্র।
শুক্রবার ভোরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাঁকে প্রথমে আটক করে এনআইএ।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের খবর, নিশারের স্থায়ী ঠিকানা পাঞ্জাবের লুধিয়ানা হলেও তাঁদের পৈতৃক বাড়ি ডালখোলা থানার কোনাল গ্রামে। কয়েক দিন আগে এক আত্মীয়ের বিয়েতে মা ও বোনকে নিয়ে কোনালে এসেছিলেন তিনি। আর সেই সময়ই আচমকা নাম জড়িয়ে গেল দিল্লির বিস্ফোরণ তদন্তে।
কীভাবে নিশারের হদিশ পেল এনআইএ?
তদন্তকারী সংস্থার সূত্র জানাচ্ছে, লালকেল্লা বিস্ফোরণের পর প্রথমে যোগাযোগ করা হয় লুধিয়ানায় থাকা নিশারের বাবা তৌহিদ আলমের সঙ্গে। তার পরেই জানা যায়, নিশার বর্তমানে উত্তর দিনাজপুরে। সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ দল রওনা দেয়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সূর্যাপুরের দিকে অভিযান শুরু হয়।
পুলিশ সূত্র বলছে, মোবাইল ফোনের লোকেশনই পথ দেখায় তদন্তকারীদের। সিগন্যাল দেখায়, নিশার সূর্যাপুর বাজারের আশেপাশেই রয়েছেন। তারপর রাতভোর নজরদারি। ভোরে অভিযান। আটক করেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ইসলামপুরে। পরে জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে শিলিগুড়ি-তে স্থানান্তর করা হয়।
পরিবার বিস্মিত, গ্রামে আতঙ্ক
নিশারের কাকা আবুল কাশেমের কথায়, 'ও খুবই শান্ত, ভদ্র ছেলে। পড়াশোনা ছাড়া কোনও কিছুতেই মাথা ঘামায় না। বিস্ফোরণ? তদন্ত? কিছুই বিশ্বাস হচ্ছে না।'
পরিবারের দাবি, তাঁদের ছেলে কোনও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকতে পারে—এ কথা কখনও ভাবেননি। আটক হওয়ার খবর পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নিশারের মা। আত্মীয়স্বজনের ভিড়ে কোনাল গ্রামে নেমে এসেছে শোক-আতঙ্কের ছায়া।
স্থানীয়দের কথায়, 'নিশার অত্যন্ত সংযত, নম্র। ওকে এভাবে নিয়ে যাওয়া—আমরাই বিশ্বাস করতে পারছি না।'
আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয় আবার তদন্তের কেন্দ্রে
এর আগে লালকেল্লা বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃত তিন চিকিৎসকের সঙ্গেও যোগ পাওয়া গিয়েছিল হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের। এবার সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্র গ্রেফতার। ফলে আরও জোরাল হচ্ছে তদন্তের জাল।
এনআইএ-র তদন্তকারীরা আপাতত চুপ। ঠিক কী সূত্রে নিশারের নাম এল তদন্তে—তা এখনও খোলসা করেনি কেন্দ্রীয় সংস্থা।
যা জানা গিয়েছে, যোগসূত্র খোঁজা হচ্ছে সহপাঠী, ফোন রেকর্ড, ডিজিটাল ট্রেস সব দিক থেকেই। এদিকে কোনাল গ্রাম প্রতীক্ষায়—তদন্তে কী উঠে আসে? নির্দোষ বলে বাড়ি ফিরবেন নিশার? নাকি তদন্ত অন্য দিকে মোড় নেবে? সব প্রশ্নের উত্তর এখন এনআইএ-র হাতে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন