বিজেপি নেতা মুকুল রায়-কে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন করে আলোচনার ঝড় তুলেছে। বিরোধী দলত্যাগ সংক্রান্ত আইন বা Anti-Defection Law অনুযায়ী বিধানসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুকুল রায় দলের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে এমন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন যা আইন ভঙ্গের সামিল। দীর্ঘ সময় রাজ্য রাজনীতিতে প্রভাবশালী মুখ হিসেবে পরিচিত মুকুল রায় ২০১7 সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন, আবার ২০২১ সালে নির্বাচনের পর তৃণমূলে ফিরে আসেন, যা রাজনৈতিক মহলে বহু প্রশ্নের সৃষ্টি করে। এই দলবদলের ধারাবাহিকতা থেকেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমতে থাকে এবং শেষমেশ আইনি পর্যালোচনার পর তার বিধায়ক পদ বাতিল করা হয়।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিধানসভায় বিজেপির সংখ্যা কিছুটা কমবে, এবং আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি বিজেপির কৌশলে প্রভাব ফেলতে পারে। তৃণমূল শিবির ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে রাজনৈতিক নৈতিকতার জয় বলে দাবি করেছে, অন্যদিকে বিজেপি অভিযোগ করেছে যে শাসকদল প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অযোগ্যতা কেবল একটি সাংবিধানিক সিদ্ধান্ত নয়—বরং রাজ্যের দুই প্রধান দলের মধ্যে বাড়তে থাকা রাজনৈতিক সংঘর্ষের প্রতিফলন।
সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা মতামত দেখা যাচ্ছে। অনেকে মনে করছেন, দলবদল বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ জরুরি; আবার কেউ কেউ বলছেন, রাজনীতিতে নীতিহীন দলত্যাগের প্রবণতা বহুদিনের, তাই এই সিদ্ধান্ত একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও বৃহত্তর রাজনৈতিক সংস্কার দরকার। তবে একথা স্পষ্ট যে, মুকুল রায়ের অযোগ্যতা আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন হিসাব নিকাশ তৈরি করবে, এবং দলবদল রাজনীতির ওপর আরও কঠোর নজরদারি বাড়াবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন