ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ ও হিংসা। উত্তেজিত জনতার আক্রমণের মুখে পড়েন সাংবাদিকরাও। ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের দুই প্রথম সারির সংবাদপত্র—‘প্রথম আলো’ ও ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর দফতরে ভাঙচুর চালানোর পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ‘বিবিসি বাংলা’-র প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ভিতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে। তবে উদ্ধার হওয়া সাংবাদিকদের একাংশ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন।
অন্য দিকে, হিংসার বলি হয়ে খুলনায় এক সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ময়মনসিংহে এক যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনাও সামনে এসেছে। ঢাকার ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে আবার ভাঙচুর চালানো হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজশাহীতেও মুজিবের আর একটি বাড়ি এবং আওয়ামী লীগের দফতরে হামলা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভকারীদের মুখে শেখ হাসিনা ও ভারত-বিরোধী স্লোগান শোনা যায়। চট্টগ্রামে ভারতের উপদূতাবাস লক্ষ্য করে ঢিল-পাটকেল ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। রাত থেকেই উপদূতাবাসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্র ও যুবকদের একাংশ।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতিতে উদ্বিগ্ন মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার ঢাকায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন ইউনূস। উল্লেখ্য, হাদির মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকার শাহবাগে জমায়েত হয় বিপুল সংখ্যক মানুষ, সেখান থেকেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শহরে। কারওয়ান বাজারে সংবাদপত্রের অফিসে অগ্নিসংযোগের সময় ভিতরে আটকে পড়েন বহু সাংবাদিক। ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর মহিলা সাংবাদিক জ়াইমা ইসলাম সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “আমি ঠিক করে শ্বাস নিতে পারছি না। চারদিকে ধোঁয়া। আমি ভিতরে আটকে আছি।” রাত প্রায় ২টো নাগাদ সবাইকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে শুক্রবার দুই সংবাদপত্রের মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়নি। ডিজিটাল সংস্করণেও কাজ কার্যত বন্ধ রাখা হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন