Top News

গ্রামে ঢুকলেই চারিদিকে শুধুই গিটার! গিটার গ্রাম ঘুরে দেখবেন নাকি? রইল হদিশ

গ্রামের নাম যাই হোক, তবে মানুষ চেনে গিটার গ্রাম হিসেবেই। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। এই গ্রামে ঢুকলে গিটারের সুর হয়তো শুনতে পাবেন না, কিন্তু চারিদিকে গিটার তৈরির শব্দ কানে আসবে অবশ্যই।ভাবছেন, এ কেমন গ্রামের নাম! উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর কাউগাছি চন্ডিতলা এলাকায় একাধিক গিটার কারখানা অবস্থিত। রাস্তার ডান-বাম চারিদিকেই শুধু গিটার তৈরির সরঞ্জাম। কিভাবে তৈরি হয় এই সুরেলা বাদ্যযন্ত্র! গত ১৫ বছর ধরে গোবিন্দ বিশ্বাস তার এই গ্রামের কারখানায় গিটার তৈরি করছেন। সেই গিটার পৌছে যাচ্ছে রাজ্যের পাশাপাশি দেশ পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও।

গোবিন্দ বাবু জানালেন, একোস্টিক গিটার অনেক ধরনের হয়। তবে এই এলাকায় মুলত পাঁচ থেকে ছয় ধরনের গিটার তৈরি বেশি হয়। একটা গিটার তৈরি করতে প্রায় সাত দিন সময় লাগে। গিটার তৈরির শুরুতে প্রথমেই নেক তৈরি হয়। সেটি কাটাই করে পৌছে যায় ফিটিংস এর ঘরে। অন্যদিকে, বিভিন্ন ডাইসে তৈরি হয় মেন বডি। বডি তৈরি করে, দুপাসে প্লাই দিয়ে আঠা লাগিয়ে নাট বোল্ট দিয়ে আটকে রৌদ্রে শোকানো হয়। তারপর চলে ফিটিংস অর্থাৎ বডির সাথে নেক এর জয়েন্ট করার কাজ। সেটা সম্পূর্ণ হলেই, চলে যায় পালিশের ঘরে। সেখানে রং ও পালিশ হয়ে চলে আসে মেন ঘরে। এখান থেকেই গিটারে সুর বাধার কাজ শুরু হয়। স্ট্রিং(তার) ফিটিংস করা হয় এখানেই। তারপর গোটা গিটার তৈরি হয়ে প্যাকিং হয়ে অর্ডার অনুযায়ী চলে যায় বিভিন্ন প্রান্তে।
গিটার গ্রামের এই শিল্পের সাথে আজ প্রচুর মানুষ জড়িত। কেউ কাঠ সাপ্লাই দেন, আবার কেউ প্লাইউড। এর পাশাপাশি, কেউ পালিশের কাজ করেন, কেউ আবার গিটারের তার বাঁধেন। সবমিলিয়ে গিটার তৈরির উপর প্রচুর মানুষের জীবিকা নির্ভর করে এই গ্রামে। কারখানা গুলিতেও প্রচুর মানুষ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাদের হাতে তৈরি এই গিটার, তৈরি হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অর্ডার অনুযায়ী পৌছে যায়। ব্যবসায়ীরা এসে গিটার দেখে অর্ডার দিয়ে যায়। সেইমত গিটার পৌছে যায় নির্দিষ্ট ঠিকানায়। এমনকি বাংলাদেশ, নেপাল থেকেও গিটারের অর্ডার আসে বলে জানালেন অনেক কারখানা মালিক-ই। লোকাল কাস্টমার তুলনামূলক কম থাকলেও, যে কেউ এসে এই গিটার গ্রাম থেকে পছন্দ করে গিটার কিনে নিয়ে যেতেই পারেন। ইচ্ছা থাকলে একবার ঘুরেও আসতে পারেন এই গ্রামে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন