দীনবন্ধু মিত্রের ১৯৬ তম জন্ম দিবসে তার স্মৃতি বইয়ের পাতায় থাকলেও, বর্তমানে ধ্বংসের পথে সাহিত্য ও নাট্যকারের হেরিটেজ তকমা পাওয়া এই বাসভবন। ২০১১ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্রের বাড়িটিকে হেরিটেজ ঘোষণা করেছিলেন। জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এই সাহিত্যিকের ভগ্নপ্রায় প্রাচীন অট্টালিকা। কিন্তু, তার প্রতিটি ইটের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে রয়েছে নানান জানা-অজানা ইতিহাস। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে জেলারই এক ঐতিহাসিক স্থান।
“নীলদর্পন” বই-এর লেখক দীনবন্ধু মিত্রের বাড়িটি বর্তমানে এখন কার্যত ভুতুড়ে বাড়ির রূপ নিয়েছে। বাড়ির গা বেয়ে নেমেছে গাছের ঝুরি। ২০১০ সালে হেরিটেজ হিসেবে গণ্য হলেও দেখে বোঝার উপায় নেই। বিশাল দরজাগুলি ক্ষয়ে গিয়েছে আর জানলা বলতে, এখন শুধুই আগাছা আর লতা-পাতা রয়েছে। বনগাঁ মহকুমার অন্তর্গত গোপালনগর থানার চৌবেড়িয়া গ্রামে দীনবন্ধু মিত্রের বাসভবনের অবশিষ্ট অংশ পড়ে রয়েছে তেরো কাঠা এলাকা জুড়ে। বনগাঁ শহর থেকে বাইশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চৌবেড়িয়া, দীনবন্ধু মিত্রের জন্মস্থান হিসাবে পরিচিত। এই এলাকায় নানান রকমভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। এখনও নীলকর চাষীদের সেই সময়কার স্মৃতি আগলে রেখেছে নীল গাছের অস্তিত্ব। দীনবন্ধু মিত্রের নামে রয়েছে স্কুল, রাস্তার নামকরণও করা হয়েছে। মিত্রপরিবারের বর্তমান বংশধররা জানান, বাড়িটি হেরিটেজ হয়েছে অনেক আগেই , তবে হয়নি বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ বা সংস্কার। হেরিটেজ কমিশন থেকে মুখ্যমন্ত্রী সব জায়গাতেই জানিয়েছেন দরবার। অবিলম্বে সরকারের তরফ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে সংস্কার করা হোক এই সাহিত্যিকের বাসভবন চাইছেন পরিবারের সদস্যরা। হেরিটেজ বাড়িটি অবিলম্বে সংস্কার না করা হলে এক সময়ের পরে কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে এই ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন এমনটাই দাবি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি করে আসলেও স্মৃতি আগলে রাখতে এখনও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের। সেক্ষেত্রে বছরে বিভিন্ন সময় হাতে গোনা কিছু পর্যটক সাহিত্যিকের এই বাসভবন ঘুরে দেখার জন্য গেলেও, পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়ে থাকে নীলদর্পণের স্রষ্টা দীনবন্ধু মিত্রের বসত ভিটেটি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন