ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এবার উপস্থিত থাকছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার রাঁচিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এই বৈঠক, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে অংশ নেবেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর সঙ্গে থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিব।
এই বৈঠকের নেতৃত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যিনি জোনাল কাউন্সিলগুলির চেয়ারপার্সন হিসেবেও দায়িত্বে রয়েছেন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির কারণেই তিনি এই বৈঠকে অংশ নিতে পারছেন না। যদিও তাঁকে এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাঁর অনুপস্থিতিতে রাজ্যের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এর আগেও কেন্দ্রীয় কোনও বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী না গিয়ে অন্য মন্ত্রীকে পাঠানোর নজির রয়েছে।
এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ঘিরে রাঁচিতে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বুধবার রাতেই রাঁচি পৌঁছে যাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকের স্থান ও আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার প্রতিনিধিরা। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব ও অর্থসচিব। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বৈঠকে অংশ নেবেন। তবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এই বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন না। তাঁর বদলে থাকবেন দুই মন্ত্রী- বিজয় চৌধুরি ও সম্রাট চৌধুরি। ওড়িশা থেকে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাজি ও উপমুখ্যমন্ত্রী প্রভাতী পারিদা। এই চার রাজ্যের প্রায় ৭০ জন প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
কী বিষয়ে আলোচনা হবে?
দেশে মোট পাঁচটি জোনাল কাউন্সিল রয়েছে- পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ এবং মধ্য। প্রতিটি জোনাল কাউন্সিলের লক্ষ্য রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয় ও পারস্পরিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার মঞ্চ গঠন করা।
এই বৈঠকে মূলত আলোচনা হবে-
নারী ও শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনের মামলার দ্রুত তদন্ত
ফাস্ট ট্র্যাক স্পেশাল কোর্ট গঠন
আন্তঃরাজ্য অপরাধ দমন
সীমান্তবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা
মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলির উন্নয়ন
গত ১১ বছরে ৬০টিরও বেশি জোনাল বৈঠক হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি রাজনৈতিকভাবে কিছু প্রশ্ন তুলতে পারে ঠিকই, তবে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব যে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক স্তর থেকেই হচ্ছে, তা স্পষ্ট। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিরা রাজ্যের অভিমত স্পষ্টভাবে তুলে ধরবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার, বৈঠকে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির পারস্পরিক সহযোগিতা কতটা জোরদার হয় এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী বার্তা দেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন