Top News

'অপরাজিতা বিল ২০২৫' নিয়ে বিতর্ক, রাজ্যপাল পাঠালেন ফেরত, জেনেনিন কারণ?

 


পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় পাশ হওয়া 'অপরাজিতা বিল ২০২৫' রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রাজ্য সরকারের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন। সংবিধানের পরিপন্থী উল্লেখ করে রাজ্যপাল এই বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছেন। এর মূল কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিলের কিছু প্রস্তাবিত আইন বিদ্যমান কেন্দ্রীয় আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সাংবিধানিক প্রশ্ন তৈরি করছে।

বিশেষ করে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ড সম্পর্কিত আইনগুলি, যেখানে সাজার ক্ষেত্রে বিচার বিবেচনার ক্ষমতা অপসারণের কথা বলা হয়েছে, তা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী বলে কেন্দ্র মনে করছে।

বিলের প্রেক্ষাপট:
কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগের পর রাজ্যজুড়ে ব্যাপক জনরোষ তৈরি হয়েছিল। এই ভয়াবহ ঘটনাটি রাজ্য সরকারকে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও কঠোর আইন প্রণয়নে উৎসাহিত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, 'অপরাজিতা বিল ২০২৫' (যদিও পূর্বে এটি 'অপরাজিতা বিল ২০২৪' নামে পরিচিত ছিল এবং সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছিল) রাজ্য বিধানসভায় পেশ করা হয় এবং পাশ হয়।

বিলটিতে কী কী প্রস্তাব রয়েছে?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই নতুন বিলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর কয়েকটি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়। এর মধ্যে BNS-এর ৬৪, ৬৬, ৬৮, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩ এবং ১২৪ ধারাগুলোতে সংশোধনীর প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়াও, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS)-এর ১৯৩ এবং ৩৪৬ ধারা সংশোধন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একইভাবে, যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইন (POCSO)-এর ধারা ৪, ৬, ৮, ১০ এবং ৩৫-এ সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

আরজি কর হাসপাতালের ৩১ বছর বয়সী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের জেরে রাজ্য সরকার যে নতুন ধর্ষণ বিরোধী বিল এনেছিল, তার মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন আরও কঠোর করা। তবে, রাজ্যপালের এই ফেরত পাঠানো এবং কেন্দ্রের আপত্তির কারণে বিলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সংবিধানের সঙ্গে সংঘাত এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী হওয়ার অভিযোগ বিলটির কার্যকারিতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। এই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন