Top News

লাইসেন্স, চাবি কেড়ে হেনস্থার দিন শেষ, ট্রাফিক পুলিশকে কড়া বার্তা হাই কোর্টের

 


ড্রাইভিং লাইসেন্স কেড়ে নিয়ে চালকদের হেনস্থা করার দিন শেষ— এমনই কড়া বার্তা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এক ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এই গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়।

তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন— শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে কোনও গাড়ি চালকের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করতে পারবে না ট্রাফিক পুলিশ।

এমনকী, কোনও অবস্থাতেই ট্রাফিক পুলিশ কারও ড্রাইভিং লাইসেন্স সাসপেন্ড বা বাতিল করতে পারবে না। এই অধিকার একমাত্র রয়েছে সংশ্লিষ্ট লাইসেন্স কর্তৃপক্ষের হাতে।


হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী:

লাইসেন্স কেড়ে নিয়ে কাউকে জোর করে জরিমানা দিতে বাধ্য করা যাবে না

বাজেয়াপ্ত করলে দিতে হবে লিখিত কারণ

অস্থায়ী অনুমোদনপত্র (acknowledgment slip) দিতে হবে ঘটনাস্থলেই

আইনের যথাযথ প্রয়োগে প্রশিক্ষণ নিতে হবে ট্রাফিক পুলিশকে

বিচারপতির পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, ১৯৮৮ সালের মোটর ভেহিকেল আইনের ধারা ২০৬(৪) অনুযায়ী, কেবলমাত্র পুলিশ অফিসার নিশ্চিত হলে এবং যথাযথ কারণ থাকলে তবেই লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা যেতে পারে।


ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ। হাইকোর্টের আইনজীবী শুভ্রাংশু পান্ডা খিদিরপুর রোড ও এ.জে.সি বসু রোডের সংযোগস্থলে তাঁর গাড়ি থামান ট্রাফিক সার্জেন্ট পলাশ হালদার। অভিযোগ, পুলিশ অফিসার তাঁকে ১০০০ টাকা জরিমানা নগদে দিতে বলেন এবং প্রতিবাদ করায় তাঁর লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করেন কোনও রসিদ না দিয়েই।


এমনকী একই দিনে আরও এক আইনজীবীকেও ৫০০ টাকার জরিমানা করা হয়। অভিযোগ, প্রথমে টাকা দিতে অস্বীকার করায় পুলিশ অফিসার তাঁর গাড়ির চাবি কেড়ে নেন। পরে টাকা দিয়ে চাবি ফেরত পান তিনি।


এইসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের মন্তব্য, পুলিশের এমন আচরণ আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে ডিসি ট্রাফিক-সহ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর এবং ডিজিপিকে রায় পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়।


এই রায়ের ফলে ভবিষ্যতে রাজ্য জুড়ে ট্রাফিক পুলিশকে আরও পেশাদার ও আইনসম্মত পথে চলতে বাধ্য হবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন