২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করলেন তাঁর রাজনৈতিক অভিমুখ— ভোটার তালিকার অদৃশ্য ‘চক্রান্ত’ ও বাংলা ভাষার প্রতি বিরূপ মনোভাবের বিরুদ্ধে জোড়া লড়াই।
বিশ্ব আদিবাসী দিবসে ঝাড়গ্রামের সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, "ভোটার তালিকা থেকে মানুষের নাম বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।" নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ‘স্পেশ্যাল ইনটেনসিভ রিভিশন’-কে ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা অভিযোগ করেন, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তাদের নাম তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কেউ বলবে ফর্ম ফিলাপ করো, কিছু পাবে— না জেনে করবেন না, কারণ ওরা তথ্য নিয়ে নাম কেটে দেবে। পরে পাঠাবে এনআরসির নোটিস।”
মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “আমরা মানব না। আদিবাসী, তফসিলি, দলিত, হিন্দু, মুসলমান— সবাইকেই ভোটার তালিকায় রাখা হবে। শুধু EPIC কার্ড থাকলেই চলবে না— এখন চাওয়া হচ্ছে বাবা-মায়ের জন্মসনদ। ২০০৪ সালের আগে জন্মানো অনেকের পক্ষেই তা সংগ্রহ করা অসম্ভব।”
এই প্রসঙ্গে তিনি তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়েন আইন প্রণেতাদের দিকে, “যাঁরা আইন করছেন, তাঁদের মা-বাবার সার্টিফিকেট আছে তো?”
এদিনের ভাষণে ভাষা নিয়েও অনুরণিত হয় প্রতিবাদের সুর। বাংলা ভাষাকে অবমাননার প্রতিবাদে মমতা প্রশ্ন তোলেন, “রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর, স্বামীজিরা কোন ভাষায় কথা বলতেন? জাতীয় সঙ্গীত কোন ভাষায় লেখা?” বিজেপি নেতাদের কিছু মন্তব্যকে হাতিয়ার করে তিনি বলেন, “বাংলা বলে কোনও ভাষা নেই— এ কথা বলা মানে ইতিহাসের অপমান।”
সভা থেকে রাজ্যের কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “সরকারি কর্মচারীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, আমার অফিসারদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমি কারও শাস্তি হতে দেব না।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন