আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে সূচনা হল চার দিনব্যাপী বিশ্ব আদিবাসী দিবস উদযাপন। প্রতি বছরের মতো এবারেও মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং উপস্থিত থেকে প্রদীপ জ্বালিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ দিবসের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছে আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে। ৭–১০ আগস্ট পর্যন্ত চলা এই আয়োজন শুধু একটিমাত্র উৎসব নয়, বরং রাজ্যের আদিবাসী সমাজের ভাষা, সংস্কৃতি, অধিকার ও উন্নয়নকে কেন্দ্র করে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি বৃহৎ উদ্যোগ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আদিবাসী সমাজের উন্নয়নে সরকার সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও স্বশক্তিকরণের জন্য আমাদের বহু প্রকল্প চালু রয়েছে এবং আগামী দিনেও থাকবে।"
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী ইউলিয়াস কিস্কু, প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, আই.এ.এস. সহ রাজ্য প্রশাসনের একাধিক শীর্ষকর্তা
ঝাড়গ্রামের খরাজোড়া স্টেডিয়ামটি পরিণত হয়েছে এক বর্ণাঢ্য সংস্কৃতি মঞ্চে। লোধা, শবর, সাঁওতাল, মুন্ডা ও ভূমিজ সমাজের শিল্পীরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, সংগীত ও পোশাকের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন তাঁদের ইতিহাস ও কৃষ্টি।
বিশেষ আকর্ষণ ছিল মুন্ডারী নৃত্য পরিবেশনা এবং আদিবাসী সাহিত্য মেলা বা Tribal Literary Meet, যেখানে আদিবাসী লেখকরা তাঁদের সাহিত্য ও গবেষণা তুলে ধরেন।
মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও সূচনা করেন, যার মধ্যে রয়েছে—
-
নতুন আদিবাসী ছাত্রাবাস ও স্কুল ভবন
-
স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্প্রসারণ
-
বনভূমি অধিকার নিশ্চিতকরণ
-
কর্মসংস্থান ও হস্তশিল্প উন্নয়ন প্রকল্প
চার দিনের অনুষ্ঠানে নানা বিষয়ের উপর সচেতনতামূলক ও পরামর্শমূলক শিবির আয়োজিত হয়েছে:
-
পুলিশ প্রশাসনের সচেতনতা শিবির
-
কৃষি ও বনভূমি অধিকার বিষয়ক কর্মশালা
-
শ্রমিকদের অধিকার ও প্রশিক্ষণ শিবির
-
ক্রেতা সুরক্ষা ও ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং ক্যাম্প
-
শিক্ষা ও স্কলারশিপ সংক্রান্ত পরামর্শ শিবির
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চার দিনব্যাপী এই বিশাল আয়োজনের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ও পরিকাঠামোগত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স, স্বাস্থ্য কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে আলাদা টিম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন