Top News

ইলিশ উৎসবে মূল আকর্ষণ সুন্দরবন, রয়েছে মনোরম পরিবেশ এবং রয়্যাল বেঙ্গল টায়গার

 News Tap Bangla:  এখনকার আবহাওয়া  হচ্ছে বর্ষার। চারিদিকে লেগেই রয়েছে বৃষ্টি। কিছু কিছু জায়গায় বন্যার পরিস্থিতি। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ইলিশ উৎসব। যেটি একমাত্র হয়ে থাকে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ম্যনগ্রোভ অরণ্য এলাকা সুন্দরবনে। ঠিক এই সময় ইলিশ মাছ ওঠে, যার ফলেই সুন্দরবনে এই মাছকে কেন্দ্র করে উৎসব শুরু হয়। এই উৎসব উপভগ করার জন্য বিভিন্ন জায়গার মানুষেরা ঘুরতে যায় এবং এই উতসবে শামিল হয়।  



সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা প্রাকৃতিক বিস্ময়ের নাম। সুন্দরবন বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চল খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী জেলার কিছু অংশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত। অর্থাৎ, এই জায়গার প্রায় ৭০ ভাগ বাংলাদেশে এবং বাকি ৩০ ভাগ ভারতে অবস্থিত।  ১৯৯২ সালের ২১ মে সুন্দরবন রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এরপর ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ ৬ ডিসেম্বর ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

এই বনে প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ২৭০ প্রজাতির পাখি, ১২০ প্রজাতির মাছ, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে। জরিপে দেখা যায় ১,০০,০০০-১,৫০,০০০ চিত্রা হরিণ ও ১০৬ টি বাঘ রয়েছে সুন্দরবনে।

সুন্দরবনে প্রচুর সুন্দরী গাছ জন্মায় বলে সুন্দরী গাছ থেকে সুন্দরবনের নামকরণ করা হয়েছে। আর এই সুন্দরী গাছ এবং চারিদিকের মনোরম পরিবেশ, নদী দেখার জন্য দেশ বিদেশ থেকে বহু পর্যটন ঘুরতে আসে। 

সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়ার সঠিক সময় নভেম্বর থেকে জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী মাস। কিন্তু এই বর্ষাতে ইলিশ উৎসব উপভোগ করার জন্য অনেকে ঘুরতে যায়। 

সুন্দরবনে ঘুরতে গেলে বেশ কিছু জায়গা না ঘুরলে পরিবেশ উপভোগ করা যাবে না। 

সজনেখালি ব্যাঘ্র প্রকল্প কেন্দ্রঃ  

এই এলাকা মূলত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, কুমির, হরিণ ও পাখির জন্য বিখ্যাত। একটি ছোট্ট জাদুঘর ও ওয়াচ টাওয়ার আছে। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের এক অপূর্ব স্থান। 

 সুজনখালি অভয়ারণ্যঃ 


এই অভয়ারণ্য হল হরিণ, বন্য শূকর, পাখি, বানর ইত্যাদির অবাধ বিচরণক্ষেত্র। এখানে সন থেকে বড় আকর্ষণ হল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। এখানে প্রাই ৯৬ টি বাঘ রয়েছে। এবং তারা সাঁতার কাটতে পারদর্শী।  এ ছারাও কুমির, দলফিন, গণ্ডার,সাপ, উল্লুক, দেখা যাবে। 



জটখালিঃ 

জটখালি হল ভ্রমণের এক নতুন গন্তব্য।  যেখানে সাইকেল চালিয়ে গ্রামের ভিতর দিয়ে ঘোরা যায় এবং সবকিছু উপভোগ করা যায়। 

বনবিবির মন্দিরঃ 

সুন্দরবনের মানুষ বনবিবিকে দেবীরূপে পূজা করে থাকেন, বাঘ থেকে রক্ষা পাওয়ার আশায়। সেই জন্য বনের মধ্যে বনবিবির মন্দির স্থাপন করে রাখা হয়েছে। 

পাখিরালয়ঃ 

পাখিরালয় হল এক পাখি সংরক্ষনের এলাকা। সুন্দরবন নানা ধরনের পাখির আবাসস্থল হল এটত। এখানে বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখতে পাওয়া যায়  যেমন—কিংফিশার, ফিশ ঈগল, বক, সারস ইত্যাদি।



মোহনাঃ  

মোহনা হল ৫ টি নদির মিলনস্থল। এখানে যেতে গেলে বোটে করে গিয়ে ৫ টি নদী উপভোগ করা যাবে। 

  • এছারাও এখানে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ লক্ষ্য করা যাবে। যেমন- সুন্দরী, গেওয়া, গরান, পশুর। এই গাছগুলিই ভূমিকে ভাঙন থেকে রক্ষা করে।
  • এখানে গেলে গাইড ছাড়া কখনো একা প্রবেশ করবেন না। এখানে বন্যপ্রাণীদের কাছে যাওয়া নিষিদ্ধ এবং প্লাস্টিক, ধূমপান ও আগুন জ্বালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক।
  • এখানে থাকার জন্য বিভিন্ন লজ রয়েছে বা স্থানীয় হোমস্টে আছে। যেমন- জটখালি, গোসাবা, পকিরাল ইত্যাদ। 
  • এখানে খাবারের মধ্যে মাছের পরিমানটা বেশি হয়ে থাকে। যেমন- চিংড়ি, ইলিশ, ভেটকি, পাবদা সহ আরও অনেক মাছ। এছারাও শাকসবজি ব্যবহার করা হয়। 
সুন্দরবন যেতে গেলে প্রথমে শিয়ালদহ থেকে ট্রেন ধরে ক্যানিং এসে পৌছাতে হবে। সেখান থেকে গাড়িতে গদথলি অব্দি যেতে হবে। 

গদখালি থেকে লঞ্চে করে গোসাবা, সাতজেলিয়া, পকিরাল, সজনেখালি ইত্যাদি দ্বীপে পৌঁছনো যায়। পর্যটনের মূল আকর্ষণ এখান থেকেই শুরু।

সুন্দরবন ঘুরতে গেলে ৫০০০  এর মধ্যে ভালো মত ঘোরা হয়ে যাবে। আর এই ৫০০০ এর মধ্যেই থাকা, খাওয়া, ঘোরা সব কিছু হয়ে যাবে খুব ভালো মত। 


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন