পুলিশ সূত্রে খবর, শান্তা পাল পেশায় ছিলেন বাংলাদেশের রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কেবিন ক্রু এবং একই সঙ্গে কাজ করতেন একজন ছোটখাটো মডেল হিসেবে। কিছু মাস আগে বৈধ পাসপোর্টে ভারত প্রবেশ করেন তিনি। প্রথমে পার্ক স্ট্রিট এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন, পরে বিক্রমগড়ে স্থানান্তরিত হন। সেখান থেকেই জোগাড় করেন ভারতীয় পরিচয়পত্র। স্থানীয় এক এজেন্টের মাধ্যমে তৈরি করান আধার কার্ড, রেশন কার্ড ও ভোটার পরিচয়পত্র।
ভারতীয় সেজে ব্যবসা চালানোর ছক
কলকাতা পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, শান্তা পাল এই ভুয়ো পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিজেকে পূর্ব বর্ধমান এবং কলকাতার বাসিন্দা বলে দাবি করতেন। এমনকি ভুয়ো আধার কার্ডের সাহায্যে একটি গাড়ি ভাড়া সংস্থাও চালানোর চেষ্টা করেন তিনি। এসব পরিচয়পত্র দিয়ে বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনাও করেছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের মামলা
বিক্রমগড় থেকে গ্রেফতার হওয়ার পর শান্তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা দায়ের করেছে কলকাতা পুলিশ। তার হেফাজত থেকে দুটি আধার কার্ড, একটি ভোটার কার্ড ও একটি রেশন কার্ড উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, শান্তা নিজের ভ্লগিং ও সামাজিক মাধ্যমের উপস্থিতিকেও কাজে লাগাচ্ছিলেন ভারতীয় পরিচয় জাহির করতে।
খাদ্য ভ্লগে 'ভারতীয়' জীবনের প্রচার
শান্তা পালের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নিয়মিত আপডেট হত তাঁর খাদ্য ভ্লগিং সংক্রান্ত ভিডিও ও 'ভারতের জীবনযাত্রা' ঘিরে নানা পোস্ট। পুলিশের সন্দেহ, এগুলিও ছিল তার পরিচয় প্রমাণ করার কৌশলের অংশ। শেষ ভিডিও পোস্ট করেন ২৮ জুলাই।
আরও দেশ ঘোরার পরিকল্পনা ছিল
পুলিশ জানিয়েছে, শান্তার মূল লক্ষ্য ছিল ভারতীয় পরিচয়ে আরও একাধিক বিদেশ সফর করা। বাংলাদেশের পাসপোর্টে আন্তর্জাতিক ভিসা পেতে সমস্যা হওয়াতেই তিনি এই পথ বেছে নিয়েছিলেন। এই ষড়যন্ত্রে আর কে বা কারা যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শান্তার সোশ্যাল মিডিয়া ঘেঁটে এমন একটি ছবিও মিলেছে যেখানে তিনি এক ব্যক্তিকে একসঙ্গে ভারতীয় আধার কার্ড এবং বাংলাদেশি পরিচয়পত্রসহ 'এক্সপোজ' করছেন। এই পোস্টও এখন তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের তরফে এখন শান্তার সঙ্গে যুক্ত চক্র এবং নথি জালিয়াতি চক্রের পর্দাফাঁসের চেষ্টা চলছে। তদন্তের অগ্রগতি অনুযায়ী আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন