ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস (ডব্লিউসিএল) ২০২৫, এই টি২০ ধাঁচের টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর, একত্র করেছিল ছয়টি “চ্যাম্পিয়ন” দলকে: অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নস, ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নস, দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নস, পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস, ভারত চ্যাম্পিয়নস এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়নস। স্মৃতিভ্রংশতা ও বিশ্বমানের ক্রিকেট দক্ষতার এই উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮ জুলাই থেকে ২ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত। চারটি ঐতিহাসিক ইংলিশ স্টেডিয়ামে (বার্মিংহ্যাম, নর্থ্যাম্পটন, লেস্টার ও লিডস) ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এই টুর্নামেন্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্রিকেট কিংবদন্তিদের উদযাপন করা এবং ভক্তদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক লড়াই উপহার দেওয়া।
অংশগ্রহণকারী দল ও স্টেডিয়াম
- অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নস
- ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নস
- দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নস
- পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস
- ভারত চ্যাম্পিয়নস
- ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়নস
ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল এজবাস্টন (বার্মিংহ্যাম), নর্থ্যাম্পটন, লেস্টার এবং লিডসে।
গ্রুপ পর্ব ও পয়েন্ট তালিকা
দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নস ও পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে উঠে আসে।
- পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে (৯ পয়েন্ট; ৪ জয়, ০ হার)।
- দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নস দ্বিতীয় স্থানে (৮ পয়েন্ট; ৪ জয়, ১ হার)।
অন্যান্যদের অবস্থান:
অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নস (৫ পয়েন্ট), ভারত চ্যাম্পিয়নস (৩ পয়েন্ট), ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নস (৩ পয়েন্ট), ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়নস (২ পয়েন্ট)।
নকআউট পর্ব
সেমিফাইনাল
- পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস সরাসরি ফাইনালে উঠে যায়, কারণ ভারত চ্যাম্পিয়নস প্রথম সেমিফাইনাল থেকে ওয়াকওভার দেয়।
- দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নস দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নসকে ১ রানে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে।
ফাইনাল
- পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস: ১৯৫/৫ (২০ ওভার)
- দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নস: ১৯৭/১ (১৬.৫ ওভার) → ১৯ বল বাকি থাকতে ৯ উইকেটে জয় লাভ করে
ম্যাচের উল্লেখযোগ্য দিক:
- এবি ডি ভিলিয়ার্স অপরাজিত ১২০ রান (৬০ বলে) করে ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরা খেলোয়াড় হন।
- জেপি ডুমিনি করেন দ্রুত ৫০ রান (২৮ বলে)।
- পাকিস্তানের হয়ে শারজিল খান করেন ৭৬ (৪৪ বলে) এবং উমর আমিন যোগ করেন ৩৬ (১৯ বলে)।
ভারতীয় চ্যাম্পিয়নদের ব্যর্থতার কারণ
- অসঙ্গত ফলাফল: শিখর ধাওয়ান ও ইউসুফ পাঠানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স সত্ত্বেও ভারত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হেরে যায়, বিশেষ করে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নসের কাছে ২৩ রানে।
- সেমিফাইনাল ওয়াকওভার: সেমিফাইনালে না খেলার কারণে তারা পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগই পেল না। ব্যবস্থাপনা, খেলোয়াড়দের উপস্থিতি বা বাইরের কোনো কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কি না - এ বিষয়ে কোনো সরকারি ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
- গতি হারানো: অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর ভারত ধারাবাহিক জয় পায়নি। ফলে তারা প্রতিযোগিতার কঠিন পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি।
এই ব্যর্থতাগুলো তাদের ২০২৪ সালের শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্ন ভেঙে দেয়।
টুর্নামেন্ট পরিসংখ্যান (*জয়–হার)
বিভাগ |
পরিসংখ্যান |
ফাইনালের ব্যবধান |
দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে বিজয়ী, ১৯ বল হাতে |
সেরা পারফর্মার |
এবি ডি ভিলিয়ার্স – ১২০* (৬০ বলে); ম্যাচ ও সিরিজসেরা |
ভারতের হাইলাইটস |
ধাওয়ান ৯১*, পাঠানের আগ্রাসী ইনিংস বনাম অস্ট্রেলিয়া; ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়, সেমিফাইনাল ওয়াকওভার |
পয়েন্ট তালিকা |
পাকিস্তান: ৯ (৪–০), দক্ষিণ আফ্রিকা: ৮ (৪–১), ভারত: ৩ (১–৩)* |
ওয়াকওভার থেকে ফাইনালের নাটক: ঐতিহাসিক শিরোপায় দক্ষিণ আফ্রিকার ছোঁয়া
ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস ২০২৫ শেষ হলো দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে, যেখানে এবি ডি ভিলিয়ার্সের স্মরণীয় সেঞ্চুরি দলকে শিরোপা এনে দিল। মাঠের ভেতরে ও বাইরে নানা নাটকীয় মুহূর্ত দেখা গেছে, ওয়াকওভার থেকে শুরু করে ভাইরাল ঘটনা পর্যন্ত। ভারত চ্যাম্পিয়নস, যারা টুর্নামেন্টের আগে অন্যতম ফেভারিট ছিল, প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয় এবং শেষমেশ সেমিফাইনালে খেলেইনি। তাদের হতাশাজনক যাত্রা দেখিয়ে দিল, কিংবদন্তিরাও কখনও কখনও চাপে ভেঙে পড়তে পারে। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখল ডব্লিউসিএল ইতিহাসে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন