ঢাকা আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানালেন, ভারত সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর উদ্দেশ্যে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে—আর সেই রায় কার্যকর করার জন্যই তাঁকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানাতে চাইছে ঢাকা। ভারতকে একটি চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, যেখানে স্পষ্ট করে বলা থাকবে—সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া ভারতের ওপর অতিরিক্ত দায়িত্ব আরোপ করছে, এবং সেই দায় মেটাতে হাসিনাকে ফেরত পাঠানো উচিত।
আইন উপদেষ্টা আরও জানান, শুধু শেখ হাসিনা নন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, যিনি একইভাবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, তাকেও ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দু’জনের ক্ষেত্রেই প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করার জন্য সব ধরনের আইনি পথ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও বিবেচনা করছে ঢাকা, যাতে ফেরত আনার দাবিটি আন্তর্জাতিকভাবে আরও শক্ত ও গ্রহণযোগ্য হয়।
ভারত ভূগোলগতভাবে নিকটতম প্রতিবেশী হওয়ায় “বড় দায়িত্ব” রয়েছে বলেই মন্তব্য করেন নজরুল। তাঁর বক্তব্য, সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের আশ্রয় দিলে আন্তর্জাতিক চুক্তি ও প্রত্যর্পণ নীতির একটি নৈতিক ভাঙন তৈরি হয়—এবং সেই দায়ভার ভারতেরই বহন করতে হয়। ঢাকার দাবি, বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য অভিযুক্তদের দেশে ফেরত পাঠানোই আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কূটনৈতিক অন্দরে এই ঘটনাকে দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের এই দৃঢ় অবস্থান ভবিষ্যতের কূটনৈতিক টানাপোড়েনকে আরও বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। সব মিলিয়ে, শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারত–বাংলাদেশের রাজনৈতিক অক্ষ আবারও নড়বড়ে হয়ে উঠেছে, আর তার প্রতিটি পদক্ষেপ এখন নজরে রাখছে আন্তর্জাতিক মহল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন